লিহান লিমা: বাংলাদেশের মানবতাপরাধীর বিচার নিয়ে পাকিস্তান একের পর এক হস্তক্ষেপ করে চলছে। এখন প্রশ্ন উঠছে দেশটির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা নিয়ে।
বিতর্কিত এই ইস্যুতে রেডিও তেহরানের সাথে এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পাকিস্তান বাংলাদেশের বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করায় দেশটির সাথে সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।
তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক এম. শাহীদুজ্জামান বললেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক দিক বিবেচনা করলে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক রাখা অনেক জরুরী। একটি সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে তা জোড়া দেয়া সম্ভব নয়।
প্রতিমন্ত্রী তার মন্তব্যে বলেন, পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করা দরকার। তবে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার নিয়ে সতর্ক মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে এম. শাহীদুজ্জামান প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যদি আমরা পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার কথা ভাবি, তাহলে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক রাখাটা জরুরি। সে দেশের নাগরিক সমাজ এবং যেসব প্রভাবশালী মহল বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। তাছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য, সার্কসহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিসহ নানা বিষয় রয়েছে। এসব চিন্তা করে আরও দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশের তুরস্ক বা পাকিস্তান বলয়ের মধ্যে চলে আসাটা যথার্থ হবে না। তুরস্কের কূটনীতিক প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়েও অতিরঞ্জন দেখা যাচ্ছে। তবে, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান আবেগের জায়গা থেকে। এ নিয়ে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা জাতীয় স্বার্থ বিরোধী হবে।
সম্প্রতি ইউরোপ আমেরিকার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এ বিশ্লেষক। বলেন, কিসের জন্য পশ্চিমারা বাংলাদেশের ওপর চাপ দেয়ার চেষ্টা করে? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ছাড়া আর কোন ইস্যু কি তাদের হাতে নেই? আর ব্লগার হত্যাসহ বাংলাদেশে সম্প্রতি যেসব সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটছে, এর চেয়ে অনেক বেশি হত্যাকা- ভারত, পাকিস্তানসহ তাদের দেশেও হয়। তাই বাংলাদেশের চেয়ে সেদিকেই তাদের মনযোগ দেয়া উচিত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে নাক গলানোর প্রয়োজন নেই।