ডেস্ক রিপোর্টঃ নির্বাচনী বিরোধের জের ধরে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের পল্লীতে সৌদী প্রবাসী একই পরিবারের ৬ জন অজ্ঞান করে সবকিছু লুটপাট ও এক মহিলাকে গণধর্ষণ করেছে প্রতিপক্ষরা।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের জালালপুরে গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছিল বলে দাবি পরিবারের। তার গলায় গভীর দাগ ও চামড়া ঝলসে গেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহের প্রবাসীর আপন ভাতিজাকে আটক করেেছ পুলিশ।
আত্মীয় পরিচয়ে বাড়িতে থাকার কথা বলে রসমালাই ও জুসের সাথে নেশা জাতীয় খাদ্যদ্রব্য পান করিয়ে এই ঘটনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অজ্ঞান ৬ জন প্রবাসীর স্ত্রী, ছেলে স্কুল ছাত্র মারুফ (১৭), রাব্বি মিয়া, (১৩) ও মহিম মিয়া (১০), দেবর নাসির মিয়া (২৮) ও ননদের জামাই আ. লতিফ (৪৫) শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল হয়ে যাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জালালপুর গ্রামের মিনার উদ্দিন আহমদ ও সাব্বির আহমদ। মিনার উদ্দিন ওই প্রবাসী আব্দুল হাসিমের আত্মীয় হওয়ায় তাকে ভোট দেন তারা। নির্বাচনে পরাজিত হয় গ্রামের প্রতিদ্বন্দ্বি সাব্বির আহমদ। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে অপরিচিত এক লোককে প্রবাসীর বাড়ি পাঠিয়ে জুস ও রসমালাই খাইয়ে তার স্ত্রী ছাড়া পরিবারের সবাইকে অজ্ঞান করা হয়। পরে অভিযুক্ত গ্রামের ইউপি সদস্য প্রার্থী সাব্বির আহমদ, প্রবাসীর ভাতিজা গুলজার ও গ্রামের প্রতিবেশী আকতারুল ইসলামসহ ৪-৫ জন প্রবাসীর স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে ও গলায় গামছা পেছিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু ওই মহিলা কৌশলে গামছার নিচে আঙ্গুল ঢুকিয়ে জীবন বাঁচান।
শুক্রবার সকালে প্রবাসীর ঘরের দরজা বন্ধ দেখে অনেক ডাকাডাকির পর পেছনের দরজা খোলা পেয়ে সবাইকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে সবাইকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় প্রবাসীর ঘরের সকল আলমিরা ভাঙ্গা পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে শুক্রবার বিকাল ৫ টায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তিকৃত প্রবাসীর ছেলেদের সাথে কথা বলেছেন দোয়ারাবাজার থানার এস আই ফিরোজ আল মামুন।
সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগের সেবিকা রুনা জানান, ধষর্ণের শিকার ওই মহিলার চিকিৎসা চলছে। ভাল করে তার জ্ঞান ফিরেনি, পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক দিলোয়ার হোসেন জানান, ওই মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং আরো ৫ জনকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মহিলার চিকিৎসা করছেন গাইনী বিভাগের চিকিৎসক।
দোয়ারাবাজার থানার এসআই ফিরোজ আল মামুন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে সবাইকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়েছে। অন্যদের জ্ঞান ফিরলেও প্রবাসীর স্ত্রীর জ্ঞান ভাল করে ফিরনি, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহের প্রবাসির আপন ভাতিজাকে আটক করেেছ পুলিশ। বিষয়টির তদন্ত চলছে।