আমিন ইকবাল : সম্প্রতি দেশজুড়ে নিয়মিত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক দিনের বজ্রপাতে অন্তত ৬৪ জন মারা গেছে। আহত হয়েছেন আরো অনেকে। প্রতিবছরই বজ্রপাতে হতাহতের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর বজ্রপাতে নিহত হওয়ার সংখ্যা অনেক বেশি। এভাবে বজ্রপাতে একসঙ্গে এত মানুষের মারা যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে এটাই প্রথম।
পৃথিবীতে যা কিছু হয়Ñ মহান আল্লাহর আদেশ ও ইচ্ছায় হয়ে থাকে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,
هُوَ الَّذِي يُرِيكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنْشِئُ السَّحَابَ الثِّقَالَ (১২) وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ وَيُرْسِلُ الصَّوَاعِقَ فَيُصِيبُ بِهَا مَنْ يَشَاءُ وَهُمْ يُجَادِلُونَ فِي اللَّهِ وَهُوَ شَدِيدُ الْمِحَالِ (১৩)
‘তিনিই তোমাদেরকে বিজলী দেখানÑ যা ভয় ও ভরসা সঞ্চার করে এবং তিনি সৃষ্টি করেন ঘন মেঘমালা। বজ্র ও ফেরেশতারা সভয়ে তাঁর প্রশংসা মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং তিনি বজ্রপাত করেন এবং যাকে ইচ্ছা তা দিয়ে আঘাত করেন, তারপরও তারা আল্লাহ সম্বন্ধে বিত-া করে। যদিও তিনি মহাশক্তিশালী।’ [সুরা রা’দ : আয়াতÑ ১২-১৩]
বজ্র নিনাদ বা মেঘের গর্জন প্রকৃতিরই নিয়ম। মহান আল্লাহই প্রকৃতির জন্য এই নিয়ম নির্ধারণ করেছেন। পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে বজ্র নিনাদের মাধ্যমে প্রকৃতি মহান আল্লাহর একচ্ছত্র আধিপত্য, তাঁর পরিপূর্ণতা এবং মহিমা বর্ণনা করে থাকে। এছাড়া, মেঘমালা সৃষ্টি এবং বৃষ্টিপাত ঘটানোর দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতারা মেঘের গর্জনের ফলে সৃষ্ট আতঙ্কে আরো বেশি আল্লাহর মহিমা কীর্তন করে।
এ সবই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় সংঘটিত হয়, তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত বজ্রপাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। প্রকৃতির এসব নিদর্শন প্রত্যক্ষ করার পরও অবিশ্বাসী কাফেররা কিভাবে সৃষ্টকর্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে এবং এ নিয়ে অযথা বিতর্কে লিপ্ত হয়!
প্রকৃতির নিয়মেই আকাশে বিদ্যুত চমকায় এবং মেঘের গর্জন শোনা যায়, তবে অনেক ক্ষেত্রে ঐশী শাস্তি হিসেবে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। পবিত্র কুরআনে সামুদ গোত্র প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, তাদেরকে বজ্রপাতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়েছে। হাদিস শরিফে এসেছেÑ যখনি আকাশে বিদ্যুত চমকাতো এবং মেঘের গর্জন শুরু হতো তখনি নবী করিম সা. দোয়া এবং ইবাদতে মশগুল হতেন।
প্রকৃতি মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রশংসা করে, পবিত্র কুরআনে তা বিভিন্ন আঙ্গিকে বর্ণনা করা হয়েছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে অধিকাংশ মানুষই তা উপলব্ধি করতে পারে না। এই আয়াত থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, এই বিশ্ব প্রকৃতিই স্রষ্টার অস্তিত্বের বড় প্রমাণ। কাজেই যে যত বেশি প্রকৃতিকে জানবে তার ঈমান বা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ততই মজবুত হবে।