সালমা পারভীন : অতি লাভের আশায়, সোনার মাটি নোনা করেছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক কৃষকরা। ধানী জমিতে নোনা পানি ঢুকিয়ে, বানিয়েছেন চিংড়ী ঘের। প্রথমদিকে লাভের মুখ দেখলেও, বছরের পর বছর ভাইরাসের আক্রমণে পথে বসেছেন অনেকেই। কর্মহীন হয়েছেন, হাজারো মানুষ। চিংড়ীতে মার খেয়ে, কেউ কেউ ঝুঁকেছেন কাঁকড়া চাষে।
এক সময় কয়েক গ্রামের মধ্যে তার জমিতেই সবচেয়ে বেশি ধান হত। তাই লোকে তাকে ডাকতো ধনুয়া অবনি নামে। এখন তার ক্ষেত ভরা নোনা জল।
১০ একর জমির মালিক অবনি কুমার জোয়ারদার, আশির দশকে অর্ধেক জমিতে চিংড়ী ঘের করেন। লাভ হয় দেখে, তার সব জমি চিংড়ী ঘেরে রূপান্তর করেন। কিন্তু, কপালে সয় না। পর পর কয়েক বছর ভাইরাসের আক্রমনে পথে বসেন তিনি। এখন সব ঘের বর্গা দিয়ে কোনরকমে টিকে আছেন।
তার মতে, চিংড়ী চাষ ভাগ্যের খেলা।
সাতক্ষীরায় স্থানীয় নদীগুলো থেকে সংগ্রহ করা বাগদা পোনায়, রোগবালাই কম, উৎপাদনও ভাল হয়। কিন্তু, এই পোনা একটার দাম এক টাকা। অন্যদিকে কক্সবাজার থেকে আসা পোনা এক টাকায় দুইটা পাওয়া যায়। অভিযোগ আছে, এই পোনায় ভাইরাস থাকে।
এ কথা ঠিক যে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়, চিংড়ী রপ্তানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা এসেছে। কিন্তু, সমাজ ও পরিবেশে যে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি হয়ে গেছে, তার জন্যও অনেক মূল্য দিতে হচ্ছে।
চিংড়ীতে মার খেয়ে অনেকে কাকড়া চাষ শুরু করেছেন। কাকড়া দ্রুত বাড়ে, দামও ভাল।
এভাবে বেঁচে থাকার নানা পথ খুঁজে বেড়ান, নোনা মাটির সন্তানেরা। কিন্তু এর শেষ কোথায়?