আল-আমীন আনাম: সংসদে বা অন্য কোনও সভায় বক্তৃতা করার কথা থাকলে চিন্তার চোটে নাকি পেট খারাপই হয়ে যেত ইন্দিরা গান্ধী! সেকারণে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বক্তৃতা দেওয়াই এড়িয়ে যেতে চাইতেন। সদ্য প্রকাশিত ‘দ্য আনসিন ইন্দিরা গান্ধী: থরু হার ফিজিশিয়ান’স আইজ’ বইয়ে এমনই দাবি করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর একসময়ের চিকিৎসক কে পি মাথুর।
সংসদে বা অন্য কোনও সভায় বক্তৃতা করার কথা থাকলে চিন্তার চোটে নাকি পেট খারাপই হয়ে যেত ইন্দিরা গান্ধী! সেকারণে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বক্তৃতা দেওয়াই এড়িয়ে যেতে চাইতেন। আবার ‘৭১-এ বাংলাদেশ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরদিন সেই ইন্দিরাকেই ‘নিরুদ্বেগে’ ঘরের কাজে হাত লাগাতে দেখেছেন তিনি। সদ্য প্রকাশিত ‘দ্য আনসিন ইন্দিরা গান্ধী: থরু হার ফিজিশিয়ান’স আইজ’ বইয়ে এমনই দাবি করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর একসময়ের চিকিৎসক কে পি মাথুর। বইটির মুখবন্ধ লিখেছেন ইন্দিরার নাতনি প্রিয়ঙ্কা বঢরা।
দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালের প্রাক্তন চিকিৎসক মাথুর লিখেছেন, ১৯৬৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সময়ে খুব চিন্তিত ছিলেন জওহরলাল-পুত্রী। বেশ খানিকটা দ্বন্দ্ব এবং স্নায়ুর চাপও ছিল। পরে সেসব কাটিয়ে ওঠেন তিনি।
১৫১ পৃষ্ঠার বইয়ে মাথুর জানিয়েছেন, সপ্তাহান্তে বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী পড়তেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। বিজ্ঞানের পত্রিকা পড়তে, শব্দজব্দের সমাধান করতেও ভালবাসতেন। তবে ১৯৭৭-এর নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর একাকিত্বে ভুগছিলেন ইন্দিরা। কর্মহীন জীবনে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয়েছিল। নিজের গাড়ি ছিল না। ক্ষমতায় থাকার সময় বন্ধুদের ফোন ধরিয়ে দিতেন অপারেটর। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নিজে সব বন্ধুদের ফোন নম্বর আর মনে করতে পারতেন না। ফলে আরও কষ্ট পাচ্ছিলেন।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, দেশে জরুরি অবস্থা চলাকালীন তাঁর এবং পুত্র সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে জনতার ক্ষোভ যে ক্রমশ বেড়ে চলেছে, তা বুঝতে পেরেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারেননি ইন্দিরা। মাথুরের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে ‘অস্বস্তি’ থাকলেও ছোট ছেলের প্রতি অত্যধিক স্নেহই সম্ভবত তাঁর মতপ্রকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ভারতের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রীকে ‘বুঝদার’ এবং স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করা ‘স্নেহময়ী’ শাশুড়ি বলে উল্লেখ করেছেন মাথুর। ওই বই অনুযায়ী, ‘বহুরানি’ সনিয়াকে প্রথম থেকেই পছন্দ করতেন ইন্দিরা। সুতরাং ঘরোয়া দায়দায়িত্ব সহজেই সনিয়ার উপর বর্তেছিল। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে মেনকার মতামত বেশি গ্রহণযোগ্য ছিল ইন্দিরার কাছে। সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর ছোট পুত্রবধূকে নিজের রাজনৈতিক সঙ্গী করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজীব-বিরোধীদের ঘনিষ্ঠ মেনকা ইন্দিরার অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়ে ‘সঞ্জয় বিচার মঞ্চে’র সঙ্গে যুক্ত হন। সূত্র: এবেলা