আবুল বাশার নূরু : নির্বাসনে থেকেই জাতীয় কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক হন সাধারণ সম্পাদক। এর আগের কাউন্সিলে প্রয়াত আব্দুল মালেক উকিল সভাপতি আর আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন।
সেসময় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা নেতৃত্বের জন্য বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। প্রয়াত জোহরা তাজউদ্দিন, মালেক উকিল এবং ড, কামাল হোসেনকে ঘিরে দলে তিনটি ধারা সৃষ্টি হয়। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ যুব সম্পাদক আমির হাসেন আমু সে সময় তেমন প্রভাবশালী হয়ে উঠেননি।
৮১ সালে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের আগে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ড, কামাল হোসেন সভাপতি পদে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। আব্দুর রাজ্জাক তার প্রস্তাব সমর্থন করেন। এর পর শেখ হাসিনাকে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ ও দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতে যান ডা, এস এ মালেক, সাজেদা চৌধুরী স্বামী আকবর হোসেন চৌধুরী। তারা প্রাথমিক আলোচনা করে দেশে ফিরেন। কিন্তু তখন শেখ হাসিনা তাদের প্রস্তাবে সাড়া দেননি। এরপর শেখ হাসিনাকে রাজি করাতে ভারত যান কামাল হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক ও প্রয়াত আব্দুস সামাদ আজাদ। এবার তাদের প্রস্তাব মেনে নেন শেখ হাসি না।
স্বজন হারানো এক সাগর বেদনা নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। প্রবল বৃষ্টি আর বৈরি আবহাওয়া মাথায় নিয়ে দেশের মাটিতে পা রাখেন শেখ হাসিনা। তাকে স্বাগত জানাতে ঢাকার পুরানো বিমানবন্দরে জনতার ঢল নামে।
শেখ হাসিনা দেশে আসার পর দল পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক বাধাঁর মূখে পড়েন। দলীয় সভায় কামাল হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাকের নানা তোপের মূখে পড়তে হয় শেখ হাসিনাকে।
শেখ হাসিনার সঙ্গে বিরোধে আওয়ামী লীগ ছেড়ে গেছেন কামাল হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক। ডা, এস এ মালেক মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্ঠা ছিলেন। বর্তমানে তিনি দলের এক নম্বর উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য। তবে দলীয় কোনও কর্মকান্ডে তিনি অংশ নেন না। আব্দুস সামাদ আজাদ মারা গেছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব মানবেন না এই মর্মে সাত পৃষ্ঠার একটি দীর্ঘ চিঠি লিখেছিলেন বর্তমানে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী।