ইয়াসমিন আক্তার : মায়ের মতোই আগলে রাখে সুন্দরবনকে সুন্দর বনের বাসিন্দারা। কারণ এই বন তাদের অন্ন দেয় এবং বাঁচায় ঝড় জলোচ্ছাস থেকে। কিন্তু সেই বন এখন ডাকাতের দখলে। মৌয়ালদের ভাষায় সুন্দরবনে বাঘের চেয়ে ডাকাতের ভয় বেশি। প্রশাসন অর্থের বিনিময়ে অপরাধীদের সাথে হাত মেলায় অথবা অপরাধীদের সাথে পেরে ওঠে না।
জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ। গাছের ডালে সাপ পোকা-মাকড় মাটিতে বিছানো তীক্ষè গাছের শাসমূল। এসব প্রতিকূলতা সাথে নিয়ে মধু সংগ্রহ করতে যান মৌয়ালরা। বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে মধু সংগ্রহ করেন মৌয়ালরা। তাছাড়া বসন্তে ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে সুন্দরী, গেওয়াসহ বিভিন্ন গাছ। মৌমাছিরা এই ফুল থেকে মধু নিয়ে মৌচাকে জমা করে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করতে আসে। তাদের অনেকেই বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে। তারপরও বাঘকে শত্রু মনে করেন না মৌয়ালরা। কারণ তারা বিশ্বাস করেন বাঘ না থাকলে সুন্দরবনও থাকবে না। তবে বাঘের রাজ্য চলে গেছে ডাকাতদের দখলে। বনে ঢোকার আগে মৌয়ালদের জন প্রতি দশ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। না দিয়ে ঢুকলে সব রেখে দেবে অথবা মুক্তিপণ নেবে কয়েকগুণ বেশি। মৌয়ালরা খাওয়া এবং থাকার কাজটি সেরে ফেলেন নৌকায় বসে। মৌয়ালরা সুন্দরবনকে মায়ের মতো ভালোবাসেন। কারণ এ বন ঝড়-জলোচ্ছাস থেকে তাদের রক্ষা করে আবার রুটি রুজিও এখান থেকে আসে। দিনের আলো ফুরিয়ে এলে তাদের বিরতি। আর রাত পোহালে আবারও প্রাণ হাতে নিয়ে ছুটে চলা।
চ্যানেল ২৪