রফিক আহমেদ : দেশের বাম দলের নেতারা বলেছেন, মস্কোপন্থী ও চীনপন্থী বিরোধে বাম দলগুলো বিভক্ত হচ্ছে। এতে দলগুলো ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে। বুধবার বাম দলের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগকালে তারা আমাদের অর্থনীতিকে এ কথা বলেন।
বাম নেতারা বলেন, সোভিয়েত নেতা কমরেড ষ্টালিনের মৃত্যুর নিকিতা ক্রশ্চেভের নেতৃত্বে ১৯৫৬ সালে বিংশতম কংগ্রেসে যে রাজনৈতিক লাইন করা হয়েছিল তাকে কেন্দ্র করে সারা দুনিয়ার কমিউনিস্ট পার্টি ও বাম মহলে ব্যাপক তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। তার প্রভাবে আজকের বাংলাদেশ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়ন বিভক্ত হয়। ১৯৬৬ সালে গোপন অবস্থায় কমিউনিস্ট পার্টি বিভক্ত হয়। একপক্ষ মস্কোপন্থী এবং অপরপক্ষ চীনপন্থী হিসেবে চিহ্নিত হয়। একই কারণে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিও (ন্যাপ) বিভক্ত হয়। একটি ভাসানী (ন্যাপ) ও অপরটি মুজাফ্ফর ন্যাপ নামে পরিচিতি লাভ করে।
বাম নেতারা বলেন, ১৯৬৬ সালে যখন কমিউনিস্ট পার্টি বিভক্ত হয়- তখন শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ৬ দফা জাতীয় নিয়ন্ত্রণ অধিকার কর্মসূচি নিয়ে হাজির হয়। তারা বলেন, কমিউনিস্ট পার্টির বিভক্তি শক্তিশালী বাম ধারাকে দূর্বল করে এবং জাতীয় রাজনীতির মঞ্চে এক কোণে ঠেলে দেয়। অন্যদিকে ৬ দফা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক মহ্চের কেন্দ্রমুখী করে এবং সামনে নিয়ে আসে।
বাম নেতারা আরও বলেন, মতাদর্শিরক্ষেত্রে বিভ্রান্ত দশায় পতিত এবং দেশের রাজনৈতিক গতিমুখে ও তাৎপর্য সঠিকভাবে অনুধাবন করতে না পারার ব্যর্থতা বামপন্থিীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও গণবিচ্ছিন্নতায় নিয়ে যায়। যদিও ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল রাজনৈতিক গণসংগ্রাম শ্রমজীবী মেহনতী মানুষের আর্থিক ও ন্যায় সঙ্গত দাবি আদায়ের সংগ্রামে বামপন্থীদের ভূমিকাই ছিল মূখ্য। মাওলানা ভাসানীর মতো একজন বিচক্ষণ প্রগতিমনা সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদ বিরোধী বামপন্থার প্রতি সহানুভূতিশীল নেতা পেয়েও বামপন্থীরা তাকে কাজে লাগাতে পারেনি।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামানকে মস্কোপন্থী ও চীনপন্থী বিরোধে বাম দলগুলো বিভক্ত হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন- এতে আপনার মন্তব্য কী জানতে চাইলে বলেন, এদেশে বামপন্থী শক্তিসমূহের অশেষ ত্যাগ তিথিক্ষা ও সংগ্রামী ভুমিকা শর্তেও ৬০ এর দশকে সঠিক পন্থা নির্ধারণে বড় ধরনের ভুল না করলে স্বাধীনতা আন্দোলনের ধারা ও পরিণতির ইতিহাস ভিন্নভাবে রচিত হতে পারতো। তবে ৪৫ বছরের অভিজ্ঞতায় বুর্জুয়া রাজনীতির ব্যর্থতা দিনের আলোর মতো যত স্পষ্ট পাশাপাশি বামপন্থী আন্দোলনের চাহিদা ও কার্যকারিতা প্রভাতের অস্পষ্ট আলো হলেও প্রতিভাত হচ্ছে এবং সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উজ্জ্বলভাবে র্দশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।