ডেস্ক রিপোর্টঃ পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সাগরনাল, গোয়ালবাড়ী ও ফুলতলা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। আড়াই শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার (১৭ মে) সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জুড়ী নদী, রাঘনাছড়া ও ধলাইছড়ার প্রতিরক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়।
সাগরনালের বরইতলি গ্রামে জুড়ী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের দুটি স্থানের ফাটল দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করেছে। এতে সাগরনাল ইউনিয়নের উত্তর সাগরনাল, উত্তর বড়ডহর, দক্ষিণ বড়ডহর, বরইতলি, কাশিনগর, হোসেনাবাদ, কাপনা পাহাড় চা-বাগান ও জাঙ্গালিয়া, গোয়ালবাড়ীর মন্ত্রীগাঁও, পূর্ব শিলুয়া, যোগীমোড়া ও পশ্চিম শিলুয়া এবং ফুলতলার কোনাগাঁও, ফুলতলা বস্তি, বটুলি ও ধলাইর হাওর এলাকা প্লাবিত হয়।
দক্ষিণ সাগরনাল গ্রামের বাসিন্দা তানজির আহমদ জানান, ঢলের পানিতে তার পোলট্রি খামার তলিয়ে যাওয়ায় চার হাজার মুরগির বাচ্চা মারা গেছে।
এলাকাবাসী আরও জানান, মঙ্গলবার রাতে জায়ফরনগর ইউনিয়নের মনতৈল ও গুচ্ছগ্রামে টিলা ধসে ৫০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে মনতৈল গ্রামের আক্কেল আলী (৫৫), তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০), ছেলে আল ইসলাম (১২) ও মেয়ে সাহিদা বেগম (১০), সিরাজ মিয়া (৬০) ও তার ছেলে মন্নান মিয়া (১২) আহত হন। জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাছুম রেজা টিলা ধসের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাছির উল্লাহ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী চাওয়া হবে।
সাগরনাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তার এলাকার কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দী। বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। অন্তত শতাধিক খামারের মাছ ভেসে গেছে।
ফুলতলা ইউপির চেয়ারম্যান ফয়াজ আলী বলেন, ঢলের কারণে ওই এলাকার দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ১১টি কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
গোয়ালবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, তার এলাকার বিভিন্ন গ্রামের দুই শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই এলকাকার অন্তত এক হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় দিন যাপন করছেন।