নাসিমুজ্জামান সুমন : সময় গড়ালেও আলোর মুখ দেখেনি তিস্তা চুক্তি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সাথে বাংলাদেশের শীতল সম্পর্ক এর প্রধান করাণ। তারা মনে করেন, শুধু ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নয়, পশ্চিমবঙ্গের সথেও কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো দরকার। প্রয়োজন ট্রানজিটের মত ভারতে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে দর কষাকষি।
সেচ মৌসুমের পুরোটাই শুকনো ছিল তিস্তার বুক। বাড়তি টাকায় ভূগর্ভস্থ পানিতেই কোনমতে ক্ষেত ভিজিয়েছে কৃষক। পানি না পেয়ে অনেকেই আবার ধান চাষ থেকে বিরত থেকেছেন। অথচ বর্ষায় ছিল এর সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র। পানিতে পরিপূর্ণ ছিল বসতবাড়িও।
গজলডোবার ব্যারাক দিয়ে পানি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে মহানন্দা নদীতে। গত ২ শতকে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশ ১৫ ভাগের বেশি পানি পায়নি। ব্যারেজ অংশে ২০ হাজার কিউসেক পানি দরকার হলেও এ বছরে ছিল ২ হাজারের নিচে। রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘এখন যে খরচ দিয়ে চাষাবাদ করতে হয় তারচেয়ে ২০ ভাগের ১ ভাগ তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানির সহযোগিতায় চাষাবাদ হতো। আর এখন সে তুলনায় ২০ ভাগ বেশি খরচ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানি তুলে চাষাবাদ করতে হয়।’
তিস্তার পানি বন্টনের সমতার জন্য অনেকদিন থেকেই দাবি জানিয়েছে আসছে বাংলাদেশ। চূড়ান্ত চুক্তির কথা থাকলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। প্রতিবারই বাঁধা হয়ে দাড়ান পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানর্জী। ট্রানজিট ও ব্যান্ডউইথ রপ্তানির মত ভারতের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে দর কষাকষি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের একটি অলিখিত চুক্তি রয়েছে যে, তিস্তা চুক্তি হলে ট্রানজিট নিয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করা হবে। এখন বাংলাদেশ যদি বিষয়টি জোর তাগিদ দিতে পারে তাহলে একটি সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।’
১ লাখের বেশি হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চালু হয় তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প। পানি না পাওয়ায় সেই পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়ছে আছে।
সূত্র: যমুনা টিভি।