আনাস ভূঁইয়া : অন্ধকারকে পেছনে ফেলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেই আত্মসমর্পণের পথে পা বাড়িয়েছেন সুন্দরবনের জেলেদের ত্রাস হিসেবে খ্যাত ‘মাস্টার বাহিনী। রোববার সকালে র্যাব ৮এর কাছে অস্ত্র জমা দেয়ার আগে এক বিশেষ সাক্ষাতকারে তিনি এ কথা জানান।
সবকিছু ঠিক থাকলে আজই আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করার কথা ছিল সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় দস্যু বাহিনী ‘মাস্টার বাহিনী’। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল উপস্থিত না থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেননি মাস্টার বাহিনী।
তবে গতকাল মাটির নিচে থাকা অস্ত্রগুলো বের করে আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তুত হয়েছিল মাস্টার বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় তারা অস্ত্রগুলোকে পরিস্কার করে নিয়েছিল।
দুর্গমবনে কেন এই কষ্টকর জীবনে এলেন এমন প্রশ্নের জবাবে মাস্টার বাহিনীর প্রধান বলেন, আমার এক মামা আমাকে এই পথে নিয়ে এসেছে। ওনার জন্যই আজ আমার এই দূর্ভোগ। আমার একটা ভাই ছিল তাকেও তারা মেরে ফেলেছে। ছোট বেলা থেকে ওনার কাছে থাকতাম। ওনারা গ্রামে রাজনীতি করেন। উনিই প্রথম আমার হাতে অবৈধ অস্ত্র তুলে দিয়ে ছিলেন। শুধু আমি একা নয় গ্রামে আরো অনেক লোক আছে তাদের হাতেও তিনি এই অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।
এই বাহিনীর আরেক সদস্যের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঠিকমত গ্রামে থাকতে পারি না। সারা বছর পালিয়ে থাকতে হয়। আর কতদিনই বা পালিয়ে থাকবেন তাই আইনের মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে ফিরতে চান তারা।
মাস্টার বাহিনীর হাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরার সুযোগ এসেছে। তবে এই পথে আছে জীবন হারাবার শঙ্কাও। রয়েছে যে কোন সময়ে প্রতিপক্ষ বাহিনীর হামলার আতংক। তারপরও কেন আত্মসমর্পণ এমন প্রশ্ন করলে মুস্তফা বলেন, ঠিকমত এলাকায় থাকতে পারি না। এলাকায় ভাই বন্ধু আছে কারো সাথে আমার সম্পর্ক নেই। তাই আত্মসমর্পণ করে নিজের পাপ মুছন ও আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক করতেই এই পথে পা বাড়ালাম।
তাদের আসা ভাল পথে ফিরতে রাষ্ট্র তাদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা করবে তাদের। আর খারাপ পথের অন্যদেরও এই পথ থেকে ফিরে আসার আহবান জানান মাস্টার বাহিনীর প্রধান মুস্তফা শেখ।-যমুনা টিভি