David Rose – Bangladesh Climate/Foreign Aid story (Folder 3)
Images supplied via David Rose
লিহান লিমা: বাংলাদেশি দুর্গতদের জন্য বন্যারোধী গৃহ নির্মাণ করতে বৃটেনের করদাতারা সাহায্য দিয়েছিল ১২ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু তা তো ঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় ই নি বরং বেহাল দশায় অসহায় মানুষেরা। যাদের জন্য অনুদান দেয়া হয়েছিল তারা বসবাস করছে অনিরাপত্তা এবং দুর্দশার মাঝে।
এসব গৃহে ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশ,কাঠ আর ছনের বেড়া। যা দিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।
তেমনি একজন ফাহিমা বেগম। কাঠ আর বাঁশের তৈরি ছোট্ট ঘরে যার বসবাস। তিনি বলেন,‘ বৃষ্টিতে আমাদের ঘর ভেসে যায়। আমাদের জামা-কাপড় ভিজে, বালিশ ভিজে, আমরা ভিজি। ঝড়ের সময় আমাদের ঘর-দরজা প্রবলভাবে কাপেঁ। শীতে আমাদের শরীরে কাপড় থাকে কিন্তু আমরা ঠান্ডায় জমে যাই। বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল এবং তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। আমি তাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই, তাদের চিকিৎসার জন্য টাকা ধার করতে হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা মারা যায়।
তিন সন্তানের মা মিসেস বেগম। বাড়ি খেজুর ডাঙ্গা। তার ঘরের আয়তন ৯ ফিট থেকে ১৫ ফিট। বাঁশের বেড়ার এই ঘরে বন্যার পানি সহজেই উঠে আসে। অথচ ঘরটি ইউকে এইড এর সহযোগিতায় নির্মিত।
বেগম বলেন, বাঁশ, খড় দিয়ে আমাদের নিমার্ণ করে দেয়া হয়েছে ঘর। তারা টয়লেট নির্মাণ করেছে সেটি ঝড়ে ভেঙ্গে গিয়েছে। যখন জোরে বাতাস আসে আমি ভাবি আমার ঘর কখন জানি ভেঙ্গে যায়। তবে তিনি বললেন, এখন আবহাওয়া ভাল আছে।
অথচ এই বাড়িগুলো আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ-ডিএফআইডির তত্ত্বাবধানে ‘ফ্রেশ’ নামে ১২ হাজার গৃহায়নের একটি পরিকল্পনার অংশ। বন্যা প্রতিরোধী আশ্রয়ের জন্য ১২ মিলিয়ন ডলারের এই সাহায্যটি যেন এক বিদ্রুপ। যা ২০১০ সাল থেকে বৃটেনের বাংলাদেশকে দেয়া ২৫০ মিলিয়ন সাহায্যের একটি অংশ।
ডিএফআইডি এর একজন ডিজাইনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্থানীয় নকশায় মূল পরিকল্পনা উপেক্ষিত হয়েছে।আমতলা গেট পাড়া মিসেস বেগম এর বাড়ি থেকে ৩০ মাইল দূরে। ডিএফআইডি এর তত্ত্বাবধানে এই গ্রামের গৃহনির্মাণ করে বাংলাদেশ চ্যারিটি সুশিলন নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
এই গাঁয়ের অধিবাসী আলি হোসেন জানান, ঝড়ে আমাদের ঘর ভেঙ্গে যায়। অথচ এই সাহায্য আপনারা আমাদের দিয়েছিলেন। আমরা অভিযোগ করতে চাই না। কিন্তু এটিই সত্যি।
আন্তর্জাতিক বিশ্বের দেয়া এই অনুদানগুলো কখোনোই এই দরিদ্র মানুষগুলের ভাগ্যে জোটে না। প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রমে নেই নূন্যতম আন্তর্জাতিক মানদ-। স্থানীয় অধিবাসীদের কথায় দেখা যায় স্বচ্ছতা তো দূরের কথা দায়সারা ভাবে কাজ করেই কার্যসিদ্ধি করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।
সূত্র: ডেইলি মেইল।