আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিদ্রোহের শহর: বাগদাদ থেকে ৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে ইউফ্রেতিস নদীর তীরে অবস্থিত ফালুজা একসময় ছোট একটি বাণিজ্যিক এলাকা ছিল। গুরুত্বের কারণেই আয়তনে বৃদ্ধি পেয়ে তা একসময় শহরে পরিণত হয়। ইরাকে সংখ্যালঘু সুন্নিরা সব সময়ই এ এলাকায় শক্তিশালী। ১৯২০ সালে ফালুজায় এক ব্রিটিশ কর্মকর্তার হাতে একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সৃষ্টি হয়। এ বিদ্রোহের অনুপ্রেরণায় ২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বে অভিযান চলার সময় ফালুজায় একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জন্ম হয়।
মসজিদের শহর: ইরাকের সুন্নিদের কাছে ধর্মীয় দিক থেকে ফালুজা একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। সুউচ্চ মিনারের অনেকগুলো মসজিদের কারণে এ এলাকা ‘মসজিদের শহর’ নামে পরিচিত।
ব্ল্যাক ওয়াটার সেতু: ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ ফালুজায় একটি মার্কিন গাড়িবহরে হামলা চালায় বিদ্রোহীরা। বহরে ছিলেন চার মার্কিন কনট্রাকটর। তাঁরা বেসরকারি সামরিক কোম্পানি ‘ব্ল্যাক ওয়াটারের’ হয়ে কাজ করতেন। তাঁদের লাশ ইউফ্রেতিস নদীর ওপরের সেতুতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। সেতুটি ‘ব্ল্যাক ওয়াটার সেতু’ নামে পরিচিতি পায়।
নতুন ভিয়েতনাম: ২০০৪ সালের ৭ নভেম্বর ইরাকে মার্কিন নেতৃত্বে শুরু হয় ‘ফ্যান্টম ফিউরি’ অভিযান। এ সময় লড়াই এতটাই ব্যাপকতা পায় যে, মার্কিন সেনারা এর আগে শুধু ভিয়েতনাম যুদ্ধেই এত রক্তক্ষয় দেখেছে। আল-কায়েদার রাজধানী হয়ে ওঠা ফালুজায় সে সময় মার্কিন সেনারা অভিযান চালান। লড়াইয়ে ৯৫ জন মার্কিন সেনা নিহত হন।
‘সাপের মাথা’: ২০১৪ সালের শুরুর দিকে সরকারবিরোধী যোদ্ধাদের হাতে পড়ে ফালুজা। সরকারি বাহিনী আনবার প্রদেশের রামাদিতে বিদ্রোহ দমন শুরু করলে নতুন করে সংঘাত শুরু হয় এ প্রদেশে, যা ফালুজায়ও ছড়িয়ে পড়ে। অনেক ইরাকির দৃষ্টিতে ফালুজা সবকিছু সূচনার স্থান। এ কারণে শহরটিকে ‘সাপের মাথা’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়।