এম কবির : নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু না হলে আবারো আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রেডিও টুডের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এ হুমকি দেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও পরিবেশে তৈরি করতে এখনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা চায় বিএনপি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্য ও জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ চাই।
বিএনপি এখন দল গোছানোর কাজ করছে উল্লেখ তিনি বলেন, এটাও একটা আন্দোলনের অংশ। বিএনপিতে কোন সংকট নেই, বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি ঘোষণা শেষ হলে জেলা সফরে বের হব। আমাদের সঙ্গে গণতন্ত্রের আন্দোলনে যারা শরিক হবেন তাদের আমরা স্বাগত জানাবো।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক ভাবে দূরে সরানোর জন্য এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় যদি তাকে অভিযুক্ত করা হয় তাহলে দেশবাসী তার জবাব দেবে। আমরা খালেদা জিয়ার মামলা আইনি ভাবে মোকাবেলার পাশাপাশি আন্দোলনে নামবো।
এরই মধ্যে দলের সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন সভা সমাবেশ বা ঘরোয়া আলোচনায় আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দিচ্ছেন। দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক ৬ এপ্রিল প্রেসক্লাবের এক আলোচনায় আগামিতে বজ্রকঠিন আন্দোলন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আগামীতে এমন উত্তাল আন্দোলন আসছে, যে আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ কিন্তু অত্যন্ত বজ্রকঠিন। সে আন্দোলনে এই সরকারের স্বৈরাচারী ধারা সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হবে।’
এর আগে জনগুরত্বপূর্ণ ইস্যুকে নিয়ে আন্দোলনে নামার কথা বলছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সরকারি হীন পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বিএনপি। আমি দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে সরকারের এ ধরনের গণবিরোধী পরিকল্পনা থেকে সরে আসার জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করলে বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি পালন করবে।’
দলের নব নিযুক্ত যুগ্ম মহাসচিব আলাল বলেন, ‘শাসকগোষ্ঠী দুর্নীতিকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সরকারের অর্থ কেলেঙ্কোরির প্রতিবাদে আগামী দিনের আন্দোলনে সরকার যে বাঁশ রডের বদলে ব্যবহার করছে, সেই বাঁশ-কুঞ্চি নিয়ে আমরা রাজপথে নামব।’
বিএনপি নেতারা মনে করেন এবারের আন্দোলনে বর্তমান সরকার বিদেশীদের বিশেষ করে ভারতের সহযোগিতা পাবে না। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই সরকারকে একটি আগাম নির্বাচন দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এ অবস্থায় বিএনপি আন্দোলনে গেলে সরকার একা হয়ে যাবে। তাছাড়া বিএনপি মনে করে দেশের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সদস্যরা গেলবারের মতো অতটা কঠোর মনোভাব দেখাবে না বলে নিশ্চিত হয়েছেন।
বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, আগামী রমজানের শেষ দিকে দেশব্যাপি কর্মসূচী দিবে বিএনপি। এর আগে দলের সকল স্তরে কমিটি গঠনের কাজ শেষ করবে দলটি। ইতিমধ্যে দলের মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সহ সাংগঠনিক পদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। দলের অপর দুই সহযোগী দল যুব ও সেচ্ছাসেবক দলের কমিটির কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যে কোন সময় ঘোষণা হতে সেই কমিটিগুলোও। সকল কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আন্দোলন সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।