আমিন ইকবাল : পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেনানায়ক ইনজামাম-উল-হক। পাঞ্জাব প্রদেশের মুলতানে জন্মগ্রহণকারী এই ক্রিকেট তারকার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ১৯৯১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে। শুরু থেকেই ক্রিকেট বিশ্বের নজড় কাড়তে সক্ষম হন তিনি। ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল মেয়াদে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টেস্ট, ওডিআই এবং টি২০ ক্রিকেটে সফলতার সঙ্গে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এক সময়ের সফল অধিনায়ক বর্তমানে পাকিস্তান দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে আফগানিস্তানের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। পাকিস্তান জাতীয় দলে নাম লেখানোর পর থেকে এ পর্যন্ত শুধু সফলতাই পেয়ে আসছেন ইনজামাম। ব্যাট হাতে মাঠ মাতানো, কোচ হিসাবে দলকে সাফল্যের সুতোয় গাথার সঙ্গে সঙ্গে ধর্ম-কর্মেও এগিয়ে ক্রিকেটের এই অনন্য প্রতিভা!
ইনজামাম-উল-হক নিয়মিত নামাজ পড়েন। পোশাকে-আশাকে মনে হয় না তিনি একজন ক্রিকেটার। মনে হয়Ñ বড় কোনা মাওলানা বা ধর্মীয় বক্তা। তার মুখ ভর্তি চাপদাঁড়ি, মাথায় সুন্নতি টুপি। সব সময় লম্বা পাঞ্জিবি পরেন। এমনকি মাঠে প্রশিক্ষণ দেয়ার সময়ও কোর্তা-পাঞ্জাবি পরে থাকতে দেখা যায় তাকে! নামাজের সময় হলে সবাইকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান জায়নামাজে। নিজে ইমামতি করে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। ইনজামাম পাকিস্তান দলের অধিনায়ক থাকাকালীন সময়েও সতীর্থদের নিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতেন। সম্প্রতি বিবিসি উর্দুতে প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়Ñ ইনজামাম পাকিস্তানের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ দেয়ার এক পর্যায়ে সবাইকে নিয়ে মাঠেই নামাজ আদায় করছেন। দৃশ্যটি মুসলিম ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আনন্দের এবং আত্মতৃপ্তিদায়ক।
এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক অভাবনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল তার মাধ্যমে। এশিয়া কাপের বাছাইপর্ব তখনো শুরু হয়নি। ১৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে ওমান ও উত্তর পাশে আফগানিস্তান জাতীয় দল অনুশীলনে নামে। অনুশীলন করতে করতে করতে ভেসে আসে মাগরিবের নামাজের আজান। সঙ্গে সঙ্গে দুই দলের মুসলিম খেলোয়াড়রা থামিয়ে দেন অনুশীলন। মাঠের এক পাশে দুই দলের খেলোয়াড়রা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে যান মাগরিবের নামাজের জন্য। আর সামনে দাঁড়িয়ে ইমামতি করেন পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচক ও তখনকার সময়ে আফগানিস্তানের কোচ ইনজামাম-উল-হক। তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও অনুশীলন দেখতে আসা দর্শকরা অভাবনীয় দৃশ্যের সাক্ষি হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেন!