শেখ সাজ্জাদ : বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর উপকূলবর্তী এলাকার ৪৮টি মানচিত্র প্রণয়ন করে দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এই অধিদপ্তর বিভিন্ন স্কেলের ডিজিটাল মানচিত্র প্রণয়ন সম্পন্ন করেছে।
তিনি বলেন,National Spatial Data Infrastructure (NSDI) থাকলে আমরা আরও ভালভাবে এবং পরিকল্পিত ভাবে কাজ করতে পারবো।
বুধবার (০১ জুন) সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে NSDI গঠনের লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) কতৃক যৌথভাবে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকার মিরপুর-১৪ নম্বর দামালকোটে স্থাপিত বাংলাদেশ জরিপ অধিদফতরের ডিজিটাল ম্যাপিং সেন্টার ভিডিও করফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কাজী হাবিবুল আওয়াল।
আমাদের জনসংখ্যা বেশি, আয়তন কম, এটুকু জায়গার মধ্যে সব মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, বাসস্থানসহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণের বিভিন্ন দ্বীপ আমাদের ঝড় জলোচ্ছ্বাস দুর্যোগ থেকে রক্ষা করবে। নতুন করে বিভিন্ন চর জাগছে। এগুলোকে কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। এ দেশটা আমাদের গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ভৌগলিক অবস্থান সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে প্রাচ্যেও প্রাচ্যাতের সেতু বন্ধনের কাজ করতে পারে বাংলাদেশ।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশের বৃহৎ স্কেলে ডিজিটাল মানচিত্র প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে ৯৮৮টি ম্যাপশিটের মধ্যে ৯০০টি ম্যাপশিট প্রস্তুত সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি Digital Elevation Model (DEM) এবং Digital Terrain Model (DTM)প্রস্তুতের কার্যক্রমও চলছে। এ মডেলগুলো বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
প্রতি বছর যেমন ভাঙনের ফলে কৃষি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে, তেমনি আমাদের সমুদ্রে কিন্তু জমি/চর জেগে উঠছে। জরিপের মাধ্যমে এসব জেগে উঠা চরকে কীভাবে ব্যবহার উপযোগী করা যায় তার উপায় বের করতে হবে। পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগিয়ে এসব চরের বা দ্বীপের ভূমি ক্ষয় বন্ধ করা সম্ভব।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তরকে সমুদ্র উপকূলে নতুন জেগে ওঠা চর ও দ্বীপসমূহের টপোগ্রাফিক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। পরিকল্পিত ভাবে আমাদের গ্রাম, শহর, রাস্তাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো তৈরি করতে পারলে উন্নয়ন অগ্রগতি সহজ হবে।
তিনি বলেন, NSDI গঠনে স্বল্প ও দীর্ঘ-মেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন, কর্মকৌশল নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হবে। সেজন্য একটা আইন প্রণয়ন করতে হব। NSDI -তে সব ডাটা থাকবে, যাতে কেউ যেন এর অপব্যবহার করতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সম্মানজনক। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি আজ খুব দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিটি সূচক ইতিবাচক ধারায় এগুচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গত ৬ বছর ধরে আমরা গড়ে ৬.৩ শতাংশ হারে জিডিপি অর্জন করেছি। এ বছর জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ হবে।