এম রবিউল্লাহ: ভারতের ৫০ হাজার নারী ও পুরুষ তিন তালাক নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। ভারতীয় মুসলিম মহিলা আন্দোলন (বিএমএমএ) দিল্লিতে দেশটির নারী বিষয়ক কমিশনের (এনসিডব্লিউ) কাছে এই প্রক্রিয়ার অবসানে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিএমএমএ’র কো-ফাউন্ডার জাকিয়া সুমন জানান, দিল্লি ছাড়াও গুজরাট, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়–, তেলেঙ্গানা, উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খন্ড, কেরালা, উত্তর প্রদেশসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গণস্বাক্ষর অভিযান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, এই পর্যন্ত ৫০ হাজার নারী ও পুরুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। তারা সবাই তিন তালাক বিরোধী। আগামী দিনে আরো অনেকের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হবে। আমরা এনসিডব্লিউ’র চেয়ারপারসন ড. ললিতা কুমারামাঙ্গালামের কাছে এই আবেদন বাস্তবায়নের দাবি করেছি। এই দাবিটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে আছে। আমরা এর অবসান চাই।
বিএমএমএ’র সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, ৯২ ভাগ মুসলিম নারী তালাকের অবসান চান। এক তরফাভাবে টেলিফোনে, মোবাইলের ম্যাসেজে ও ইমেইলের মাধ্যমে মেয়েদের তালাক দেওয়ার প্রবণতা সম্প্রতি বেড়েছে। আর তালাক মানেই মেয়ের জীবনে নেমে আসে বিপর্যয়।
বাইন তালাকের পর নিকাহ হালালার প্রক্রিয়া নির্মম ও নিষ্ঠুর অনুশীলন। নিকাহ হালালা অনুযায়ী তালাক দেয়া স্বামীকে পুনর্বার বিয়ে করতে হলে আরেক জনকে বিয়ে করতে হবে। এই মহিলা তার ভরণ পোষণ ও সন্তান প্রতিপালনের জন্য কিছুই পাবে না। এক করুণ পরিস্থিতি তাকে মোকাবেলা করতে হয়।
ভুপালে বসবাসকারি সাদিয়া ভাকুয়াস বলেন, পুরুষরা ফেইসবুক ও এসএমএসের মাধ্যমে নারীদের অহর্নিশ তালাক দিচ্ছে। যদিও তাদের আইনগত কোনো অধিকার নেই। কাজীও তাদের সমর্থন করেন, আমাদের নয়।
বিএমএমএ’র নূরজাহান সাফিয়া নাফিজ বলেন, অনেক ক্ষেত্রে কাজী তাদের এই ইস্যুতে অস্থায়ী বা সাময়িকভাবে স্বামী গ্রহণের পরামর্শ দেন। সম্প্রতি দেরাদুনভিত্তিক সায়েরা বানু এই অনুশীলন বাতিল দাবি করে সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করেছেন।
বিএমএমএ পুনর্মিলন ও মধ্যস্থতার পক্ষে অভিমত দিয়ে আবেদন জানায়। ৯০ দিনের মধ্যে তালাক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা। মুসলিম মহিলারাও ভারতের নাগরিক। তাদের ক্ষেত্রেও সাংবিধানিক সুরক্ষা থাকতে হবে। মুসলিমদের ব্যক্তিগত আইন অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। যাতে পক্ষপাতমূলক আইনগুলো অবৈধ বলে ঘোষিত হয়।
আবেদনে আরও বলা হয়, এমনভাবে আইন সংস্কার জরুরি যাতে মুসলিম নারীরা কোরআনের আইন ও সাংবিধানিক আইনের সুরক্ষা পায়। টাইমস অব ইন্ডিয়া।