মাজহারুল হক : সুইজারল্যান্ডে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ এবং সবচেয়ে গভীর রেল সুড়ঙ্গটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রায় দুই দশক ধরে সুড়ঙ্গটির নির্মাণ কাজ চলেছে।
৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ গোটহার্ড রেল সুড়ঙ্গটিতে জোড়া রেল রাস্তা রয়েছে। সুইস আল্পাস পর্বতের নিচে তৈরি এই সুড়ঙ্গ দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ইউরোপের মধ্যে দ্রুত গতির রেল চলবে। এই রেল সুড়ঙ্গ ইউরোপের পণ্য পরিবহন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনবে বলে আশা সুইস কর্তৃপক্ষের।
রেল সুড়ঙ্গটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তর দিকের প্রবেশমুখে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট জোহান স্নাইডার-আমান বলেন, “সুইজারল্যান্ডের জন্য এ এক বিশাল পদক্ষেপ। সেইসঙ্গে এটি আমাদের প্রতিবেশী এবং এ মহাদেশের বাকি দেশগুলোর জন্যও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।”
সুড়ঙ্গের অন্য প্রান্তে ছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রী ডরিস লিউথার্ড। এরপর পাশাপাশি দুইটি রেল লাইনে বিপরীত দিক থেকে দুইটি ট্রেন কয়েকশ’ অতিথি যাত্রী নিয়ে রওয়ানা দেওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে রেল সুড়ঙ্গটি উদ্বোধন করা হয়।
এ রেল সুড়ঙ্গ তৈরি করতে ১২০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হয়েছে। সুড়ঙ্গটি তৈরি করা নিয়ে ১৯৯২ সালে সুইজারল্যান্ডে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়।
ডিসেম্বরে সুড়ঙ্গটি সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার উপযোগী হবে। এর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ ও ইতালির মিলানের মধ্যে ভ্রমণকারীদের প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় বেঁচে যাবে।
সুড়ঙ্গটি পার হতে ১৭ মিনিট মত লাগবে। প্রতিদিন প্রায় ২৬০টি পণ্যবাহী ট্রেন এবং ৬৫টি যাত্রীবাহী ট্রেন সুড়ঙ্গ পথে চলবে।
মূল্য সংযোজন কর ও জ্বালানি কর, সড়কে ভারি যান চলাচলের চার্জ এবং বিভিন্ন দেশে দেওয়া ঋণ যেগুলো এক দশকের বেশি সময় ধরে পরিশোধ করা হয়নি সেগুলো থেকে সুড়ঙ্গটির নির্মাণ ব্যয় উত্তোলন করা হয়েছে।
এর আগে জাপানের সেইকান রেল সুড়ঙ্গটি (৫৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার) বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ রেল সুড়ঙ্গ ছিল। তার পরেই ছিল ৫০ দশমিক ৫ কিলোমিটার লম্বা চ্যানেল টানেল (ইউরোটানেল), যেটা যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সকে যুক্ত করেছে।