হাসান আরিফ : জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। ৩টা ৪৫ মিনিটে তিনি বাজেট বক্তব্য শুরু করেন।
এর আগে ‘প্রবৃদ্ধি সঞ্চারে নতুন মাত্রার’ লক্ষ্য নিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এটি হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট। ইতোমধ্যে সংসদে পেশের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার এ বাজেট অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
তিন লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট চূড়ান্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। বিপুল অঙ্কের এই অর্থ সংস্থান করতে গিয়ে দুই লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন তিনি। বাকি ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা ঘাটতি মেটাতে সবচেয়ে বেশি নির্ভর করতে হবে ব্যাংক খাত, সঞ্চয়পত্র ও বৈদেশিক খাত থেকে নেওয়া ঋণের ওপর। বাজেটে দুই লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ব্যবস্থা থেকে আদায় করা হবে দুই লাখ তিন হাজার ১৫২ কোটি টাকা।
রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে এবারএনবিআর বহির্ভূত কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাত হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন সেবা ফি বা করবহির্ভূত উৎস থেকে আয় করা হবে ৩২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে ৫ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
নতুন অর্থবছরে ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে ৩৮ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার। এর মধ্য থেকে আগে নেওয়া বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে আট হাজার ১৫৮ কোটি টাকা। ফলে বিদেশি উৎস থেকে নতুন অর্থবছরে সরকারের নিট ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩০ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া দেশের ভেতর থেকে নতুন অর্থবছরে ৬১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা ঋণ নেবে সরকার।
নতুন অর্থবছরের বাজেট থেকে উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় হবে এক লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এক লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত প্রকল্প ব্যয় চার হাজার ১৪৭ কোটি টাকা।
এ ছাড়া কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে এক হাজার ৮২৬ কোটি এবং রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থায়নকৃত উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় হবে ৩৫৪ কোটি টাকা। তবে মূল উন্নয়ন ব্যয় এক লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকার সঙ্গে নতুন অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনগুলোর উন্নয়ন ব্যয় ৯ হাজার ৬৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা যোগ করলে আগামী অর্থবছরে সর্বমোট উন্নয়ন ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া নতুন অর্থবছরজুড়ে দুই লাখ ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা অনুন্নয়ন খাতে ব্যয় হবে। এর মধ্যে অনুন্নয়ন রাজস্ব ব্যয় এক লাখ ৮৮ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। সরকারের নেওয়া অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে ৩৮ হাজার ২৪০ কোটি টাকা ও বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ করা হবে এক হাজার ৭১১ কোটি টাকা। এ ছাড়া অনুন্নয়ন মূলধন ব্যয় খাতে ২৬ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা, ঋণ ও অগ্রিম খাতে আট হাজার ৪২৮ কোটি এবং খাদ্য হিসাবে ঋণাত্মক ৫৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। আগামী অর্থবছরের খাদ্যশস্য সংগ্রহের তুলনায় বিতরণ বেশি প্রাক্কলন করায় নিট খাদ্য হিসাব ঋণাত্মক দেখানো হয়েছে।