আরিফুর রহমান : নওগাঁর রাণীনগরের একঢালা ইউনিয়নের চার পরিবারকে সাত মাস ধরে একঘরে করে রেখেছে সমাজপতিরা। তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে গ্রামের সব সুযোগ সুবিধা। এমনকি ঐ পরিবারের লোকজন সমাজের বাঁধা উপেক্ষা করে নামাজ পড়তে যাওয়ায় হামলা চালানো হয় তাদের বাড়িঘরে। বারবার চেষ্টা চালিয়েও বিষয়টি সুরাহা করতে পারেনি ইউপি চেয়ারম্যান।
ঘটনার শুরু সাত মাস আগে। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে নওগাঁর রাণীনগরের বামাপুর, ভেপরাবাড়ি গ্রামে স্থানীয়রা জানায় খেলার টাকা তোলা নিয়ে আবদুল জলিলের সাথে কথা কাটাকাটি হয় গ্রামের মাতব্বর ফজল আলী ও সোলায়মান আলীর। এর জের ধরে জলিলের পরিবারের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ ডেকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ঘোষণা দেয়া হয় টাকা না দিলে চার ভাইকে এক ঘরে করে রাখার।
আবদুল জলিল বলেন, ‘বাচ্চাদের গাড়িতে চড়তে দেয়া হয় না, স্কুলে যেতে দেয়া হচ্ছে না’।
বাড়ির বাচ্চারা বলেন, ‘আমাদের স্কুলে যেতে দেয় না, মাদরাসায় যেতে দেয় না, মসজিদে নামাজ পড়তে পারছি না। আমরা কি অপরাধ করছি’।
ভূক্তভোগী পরিবারের দাবি গত ৮ জুন তারাবির নামাজ পড়তে গেলে মসজিদ থেকে মারধর করে বের করে দেয় সমাজপতিরা। হামলা চালায় বাড়ি-ঘরে। তবে সমাজপতিদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের মতামত পাওয়া যায়নি।
বিষয়টি স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘একঘরে করার পরে তাদের মসজিদে আসতে দেয়া হয় না। জলিল আমার কাছে অভিযোগ করেছিল। থানা থেকে মীমাংসা করে দেয়। তারপরেও তাদেরকে মসজিদে নামাজ পড়তে দেয়া হয় না’।
নওগাঁ রানীনগরের অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘এক ঘরে করে রাখার বিষয়টি সঠিক নয়। নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা নেয়া হয়েছে, অ্যারেস্টও করা হয়েছে। তারপরেও তাদের ওপরে হামলা হচ্ছে, বাচ্চাদের স্কুলে যেতে দেওয়া হচ্ছে না এটা আমি জানি না। এই বিষয়ে জানার পর অবশ্যই ব্যবস্থা নিব’।
সূত্র: চ্যানেল ২৪.