ডেস্ক রিপোর্ট : ট্রানজিট চুক্তির পর বিনিয়োগে আগ্রহ বেড়েছে ভারতেরআজ বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিক নৌ ট্রানজিট চালু হচ্ছে। কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, নৌ প্রোটোকল চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে এটি হবে নিয়মিত ট্রানজিট।
১৯৭২ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিতে ট্রানজিট প্রসঙ্গের উল্লেখ ছিল। পরবর্তীতে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে। তবে ফি নির্ধারণ, অবকাঠামো দুর্বলতাসহ নানা সমালোচনার কারণে ট্রানজিট নিয়ে কেউ আর এগোয়নি। সংশ্লিষ্টরা আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেছেন, নৌ প্রটোকল চুক্তিতে বন্দর ব্যবহারের বিধান না থাকায় ভারতকে এতদিন তা দেওয়া সম্ভব না হলেও ২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এলে এই চুক্তি সংশোধন করে বাংলাদেশ। গত বছর দিল্লিতে চুড়ান্ত হয় মাশুল নির্ধারণের বিষয়টি। মূলত এরপর থেকেই ট্রানজিটের বিষয়ে ভারতই বেশি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। সবশেষ দুই দেশের আলোচনার মাধ্যমে ট্রানজিটের রুট নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশের নৌ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, এর আগেও দু’-একটি ক্ষেত্রে নৌ ট্রানজিট দেওয়া হয়েছিল ভারতকে। তবে তা আনুষ্ঠানিক ছিল না। এবারই প্রথম মাশুলের বিনিময়ে ভারতের পণ্যবাহী জাহাজ বাংলাদেশের নৌ সীমায় প্রবেশ করছে।
নৌ মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, এরই মধ্যে একটি ভারতীয় জাহাজ বাংলাদেশের নৌসীমানায় প্রবেশ করেছে। জাহাজটির বুধবার রাতে যে কোনও সময়ে আশুগঞ্জে পৌঁছানোর কথা।বৃহস্পতিবার ওই জাহাজটি থেকে পণ্য খালাসের মাধ্যমে শুরু হবে নৌ ট্রানজিটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা।
এখন থেকে নিয়মিতভাবে এমনি করেই ভারতের চেন্নাই, কৃষ্ণপত্তম, বিশাখাপত্তম, কাশিনাদা, প্যারা দ্বীপ, হলদিয়া ও কলকাতা নৌবন্দর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়বে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মংলা, খুলনা, পায়রা, নারায়ণগঞ্জ, পানগাঁও ও আশুগঞ্জ বন্দরে। বন্দর থেকে পণ্য খালাস হলে বাংলাদেশি ট্রাক সেই পণ্য নিয়ে যাবে ভারতে।
বাংলাদেশের নৌ সচিব অশোক মাধব রায় আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেছেন, ‘ভারতের সাতটি বন্দর থেকে পণ্য আসবে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দরে। বাংলাদেশ থেকে সড়ক পথে এ সব পণ্য যাবে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে। তবে নিষিদ্ধ কোনও পণ্য পরিবহণ করা যাবে না।’
উল্লেখ্য পণ্যের শুল্ক, সড়ক ও বন্দর ব্যবহারের জন্য তিনটি পর্যায়ে ফি বা মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন পণ্যের জন্য শুল্ক ফি ধরা হয়েছে ১৩০ টাকা, রোড চার্জ প্রতি কিলোমিটারে ৫২ টাকা ২২ পয়সা আর বন্দর ব্যবহারের জন্য ১০ টাকা পাবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বি আইডব্লিউটিএ)। ১৯২ টাকা দিয়ে ভারতের এক মেট্রিক টন পণ্য বাংলাদেশ দিয়ে আবার ভারতে যাবে। তবে নৌ মন্ত্রণালয় বা ট্যারিফ কমিশনের পক্ষ থেকে কোথায় এবং কীভাবে ট্রানজিট ফি আদায় করা হবে তা এখনো সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। আনন্দবাজার পত্রিকা
স্থানীয় সময় : ০৪০০ ঘণ্টা, ১৬ জুন ২০১৬
সম্পাদনা : শামস্