নাজনীন পলাশী : ইউনিসেফের শিশু সংস্থার নতুন প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঙ্গীহীন শিশু শরণার্থী এবং অভিবাসীদের একটি সংখ্যা ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চল থেকে ইতালিতে এসেছে। এসব শিশুদের সংখ্যা চলতি বছরের গত ৫ মাসে দ্বিগুণ হয়েছে যার সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে । খবর মিডিল ইষ্ট আই এর
ইউনিসেফের ‘পথের প্রতি পদে পদে বিপদ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে দেখা গেছে প্রতি দশ টি শিশুর মধ্যে ৯টি শিশুই মা বাবা বা অভিভাবক ছাড়া ইতালিতে পৌঁছাচ্ছে। আগত মোট ৭,৫৬৭ টি শিশুর মধ্যে ৭ হাজার ৯টি শিশুই সঙ্গীহীন।
দ্য ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এর এই মাসের শুরুতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখিত একটি সংখ্যা ইউনিসেফ তুলে ধরেছে। আইওএম উল্লেখ করেছে প্রায় অর্ধেক শরণার্থী এসেছে মিশর, গাম্বিয়া, গিনি এবং কোত দিভোয়ার থেকে এসেছে। ২০১৫ সালে আগত ৫০০ সঙ্গীহীন শিশু এসেছে। আইওএম’র হিসাব অনুযাযী, প্রত্যেকটি শিশুরা বয়স ১৮ বছরের কম।
গত মঙ্গলবার ইউনিসেফের মুখপাত্র সারাহ ক্রো একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কি কারণে এত শিশুরা সঙ্গীহীন এখনও তা স্পষ্ট নয়।
ইউনিসেফের প্রতিবেদনে আরও যোগ করা হয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের শরণার্থী এবং অভিবাসীদের মৃতের সংখ্যা ২০১৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ছিল ১,৭৮৬ টি যা ২০১৬ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে জুনের ৫ তারিখ পর্যন্ত বেড়ে হয়েছে ২,৪২৪ টি।
সঙ্গীহীন এবং একা শিশুরা নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে তারা ইউরোপ আসতে যেসব পাচারকারিদের উপর নির্ভর করছে তাদের মাধ্যমেই শিশুদের নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইতালির লিম্পসুডা বা সিসিলি দ্বীপে আসা প্রতিটি শিশুর লোমহর্ষক গল্প রয়েছে। ইউরোপের তীরে পৌঁছার সময় ছেলে মেয়ে সবাইকে যৌন নির্যাতন এবং জোড়পূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছে। এসব শিশুদের মধ্যে কিছু মেয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে।
ইউনিসেফের অভিবাসী সঙ্কটের বিশেষ সমন্বয়ক মেরি-পিয়ের পয়রিয়ার বলেন, এসব শিশুদেরকে কখনই আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয়, তাদের এই দুরবস্থার জন্য কোন ভাবেই তারা দায়ী নয়। এছাড়া তাদের সবার একটি ভাল জীবন পাওয়ার অধিকার আছে। এসব সঙ্গীহীন শিশুদের নিজ দেশে এবং যেসব দেশে তারা যাচ্ছে সেখানে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা এবং মনোযোগ প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি বলেন।
সংস্থাটি জানায়, প্রতিদিন হাজার হাজার শিশু বিপদের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং আরও শত সহস্র শিশু তাদের যাত্রাপথে বিপদে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।