আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মান্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে স্যুইডেনের সুপার ব্যান্ড ভলভো। ভলভোর নতুন জন্মের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে সহায়তা করেছে চীনের প্রতিষ্ঠান গিলি। গত দশক জুড়ে বিশ্বব্যাপি ছিলো অর্থনৈতিক মন্দা। এই মন্দা নিত্যপণ্যের বাজারে যেমন প্রভাব ফেলেছে, তেমনি প্রভাব ফেলেছে পূঁজি বাজার ও বিলাসদ্রব্যের বাজারেও। বিশ্বব্যাপি মন্দা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে বিলাসবহুল গাড়ি উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর।
সুইডেনের ভলভো বিশ্বের অন্যতম বিলাসী গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। অন্য অনেক গাড়ি প্রতিষ্ঠানের মতো ভলভোতেও মন্দার ঢেউ লাগে। কমে যায় গাড়ি বিক্রির সংখ্যা। একেতো মন্দার আঘাত, তার ওপর জার্মানি প্রতিপক্ষের আগ্রাসী বাজারজাত উদ্যোগ ভলভোকে সংকটে ফেলে। আর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে আসে ভাবমূতি সংকট। ফোর্ডের কাছে শেয়ার বিক্রি এই ভাবমূর্তি সংকটের প্রধান কারণ। বাস্তবতা যাই হোক, পূঁজি বাজারে ভলভোর ইমেজ দাঁড়ায় অনেকটা দেউলিয়ার মতো। ফোর্ড ভলভো ছেড়ে গেছে, না ভলভো ফোর্ড ছেড়েছে এ বিষয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়।
এমন সংকট কালে, ২০১০ সালে চীনের প্রতিষ্ঠান গিলি হোল্ডিং গ্রুপ ১২০ কোটি ডলারে ভলভোর শেয়ার ফোর্ডের কাছ থেকে কিনে নেয়। এটাই ছিলো কোন চীনা কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিদেশি গাড়ি কোম্পানির শেয়ার কেনা। এ ক্রয় বিস্মিত করে মিডিয়া পন্ডিত ও বাজার বিশেষজ্ঞদের। ভলভো সেইফ ড্রাইভ কার মেকার একথা ঠিক। কিন্ত তলানিতে থাকা ভাবমূর্তির এই প্রতিষ্ঠানকে কী করে টেনে তুলবে গিলি? এর প্রশ্নের উত্তর মিলছিলোনা কারো কাছে।
গিলির পরিকল্পন ছিলো পরিষ্কার। তারা ভলভোর আগের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে রেখে দিলো। কোম্পানি চেয়ারম্যান লি শুফু টাকা কামাই করার বদলে আইডিয়া উদ্ভাবনের নির্দেশনা দেন। নিনি গুরুত্ত দেন দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনার ওপর, যা ভলভোকে বাঁচিয়ে রাখবে এবং আবার প্রতিষ্ঠা করবে আগের মহিমায়। ভলভোর আগর সিনিয়র নির্বাহীরা বুঝতে পারেন তাদের কোম্পানি নিজেই একটি শক্তিশালী ব্রান্ড, যা গত কবছরে ম্লান হয়ে গিয়েছিলো।
ছয় বছরের মাথায় ভলবো ঘুরে দাঁড়ায়। তার গাড়ি এবং সাংস্কৃতির মূল্য নিয়েই ঘুরে দাঁড়ায়। মারর্টিনস হলো শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের একজন। তিনি জানান, তারা চিন্তা করেছেন বিপণন ধারণা নিয়ে, প্রযুক্তি ও ডিজাইন নিয়ে এবং মানসম্পন্ন গাড়ি উৎপাদন নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ভলভো টিকে গেছে।
ভলভোর প্রকৌশলীরা চার সিলিন্ডিার গাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। আর বদলে দেয় অনুসঙ্গগুলো। যেমন তারা যুক্ত করে টারবো চার্জ, সুপার চার্জ ও ইলেট্রিক ড্রাইভ। যুক্ত করা হয় টাচস্ক্রিন, ভেন্টিরেশন সিস্টেম ও নেভিগেটর। আরো কিছু অনুসঙ্গ যা ভলভোকে নতুন করে উপস্থাপন করে।
গিলির অধীনে প্রথম নতুন মডেলের গাড়ি আসে ২০১৫ সালে, এক্সসি-৯০। এটা আসলে ভলভোর আগের মাঝারি আকারের একটি গাড়ির নতুন রূপ। বাহারি ভেতর সজ্জা ও বাইরের সাজ আর সুরক্ষা প্রযুক্তি বাজার মাত করে।
ভলভোর নির্বাহীরা বলছেন, এক্সসি-৯০ ভলভোর নয়া জনম দিয়েছে। বিবিসি।