সাজ্জাদুল হক : প্রতি বছর জাতীয় বাজেটে রাজস্ব আয়ের যে লক্ষমাত্রা ধরা হয় তার প্রায় ২০ শতাংশের যোগানদাতা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। তবে প্রতিবছর এই প্রতিষ্ঠানটিকে যে হারে লক্ষমাত্রা দেয়া হয়, সেভাবে কিন্তু অর্জন হয় না। কারণ, যে আমদানি মূল্যের ওপর ভিত্তি করে শুল্ক আদায় হয় তাতে রয়েছে বিপুল তারতম্য। আর সম্প্রতি আমদানি বাড়লেও সে অনুপাতে মূল্য বৃদ্ধি না হওয়ায় হোঁচট খেতে হচ্ছে আদায়ে। যার ধাক্কা লাগছে দেশের সামগ্রিক রাজস্ব আয়ে। তাই বিশ্লেষকদের মতে, বাস্তব অনুষঙ্গগুলোকে বিবেচনায় এনে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা জরুরি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। যার প্রায় ১৯ শতাংশ বা ৩৩ হাজার ১২১ কোটি টাকা যোগানের দায়িত্ব দেয়া হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসকে। চলতি বছরের মে পর্যন্ত গেল ১০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে শুল্কযুক্ত আমদানি হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি ৫৫ লাখ টন পণ্য। বিপরীতে শুল্কমুক্ত পণ্য এসেছে প্রায় ৭ কোটি ১ লাখ টন। যাতে রাজস্বের তারতম্য প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগের তুলনায় আমদানি প্রায় ২৫ শতাংশ বাড়লেও পণ্যের মূল্য বেড়েছে ৬ শতাংশ। আর মূল্যের ওপর ভিত্তি করেই যেহেতু রাজস্ব আদায় হয় তাই আসেনি কাক্সিক্ষত ফল। সম্প্রতি চলতি বছরে দেশের রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা ২৬ হাজার কমিয়ে দেড় লাখ কোটিতে নামিয়ে এনেছে সরকার। তবে এখনো আগের অংক বহাল থাকায় কাস্টমসের লক্ষমাত্রা উল্টো ৩ শতাংশ বেড়ে প্রায় ২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
প্রতিবছর বাড়ছে কাস্টমসের রাজস্বের লক্ষমাত্রা। বিশ্লেষকরা বলছেন, যেহেতু কাস্টমসের আয়ের ওপর জাতীয় বাজেটের বিশেষ নির্ভরতা রয়েছে, তাই বাস্তব অবস্থা আর সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানটির এবং জাতীয় রাজস্বের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা জরুরি। চলতি অর্থবছরের আর কয়েকদিন মাত্র বাকি। তাই এখনই জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার অনুপাতে কাস্টমসের লক্ষ্যমাত্রাও কমিয়ে আনার তাগিদ দিলেন বিশ্লেষকরা। চ্যানেল টোয়েন্টিফোর