ছাতক প্রতিনিধি : ছাতকে দুটি সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। এঘটনায় কাউকে আটকও করেনি পুলিশ। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে শালিসের মাধ্যমে শেষ করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান বকুল।
গত বুধবার সাড়ে রাত ১০টার দিকে ছাতকের জাউয়াবাজারে ও কালারুকা ইউনিয়নের হাসনাবাদ বাজারে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে জাউয়া বাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মহিলাসহ অর্ধ শতাধিক লোক আহত হন। গুরুতর আহত ১১ জনকে ভর্তি করা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাউয়া ইউনিয়নের জাউয়া পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র রকিবুর রহমান ও জাউয়া কোনাপাড়া গ্রামের মৃত আজিজুল ইসলামের পুত্র রকি একে অপরের বন্ধু। রাতে বাজারের একটি ø্যাকবারে বসে রাকিবুর ও রকির মধ্যে অজ্ঞাত একটি বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে উভয়পক্ষের লোকজন তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন। এসময় জাউয়াবাজারসহ আশপাশ এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। বাজারে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র ও পেপসির বোতলসহ ব্যাপক ইটপাটকেল ব্যবহার করা হয়। ছাতক থানা ও জাউয়া ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্যদের মধ্যস্থতায় এক পর্যায়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রায় আধঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে মহিলাসহ উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক লোক আহত হন।
গুরুতর আহত আনোয়ার হোসেন (২২), দিলোয়ার (২২), রোমান(২১), আফিয়া বেগম(৪০), হালিমা বেগম (৫০), সানুর আলী (৫০), জাহেদ (২২), রকি (২২), হামিদ (২০), আলামিন(২০) ও ওসমান (৩০)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত নায়েব আলী (২০), আব্দুল আজিজ (২৮), ঝুনু (১৮), জামিল আহমদ (৩০), জুলকদর মিয়া (৫৫), নুরুল ইসলাম (৭০), ময়নুল (২২), দেলোয়ার হোসেন (২৬), এমদাদ(২০), আক্তা হোসেন (৩০), কবির আহমদ (৩০), সামির আলী (২০), সাইফুল (১৮), মিজানুর (১৮), আব্দুর রহিম(২২), মুহিবুর(১৮), শফিক মিয়া (২০), নাবিল(১৬), নাসির উদ্দিন(২৮), তাইদ মিয়া(৩০), আব্দুল হামিদ(২০), বদরুল (২৮), মুক্তাদির মিয়া (৩২), আলাউর (৩৮), আজির উদ্দিন (৩০) রাজ ু(২৫), সাইদ আহমদ (২০), রহমত আলী(৪০)সহ অন্যন্যাদের কৈতক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি সালিশ-বৈঠকের মাধ্যমে আপসে নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
জাউয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষপ করেছে। বাজারে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে কালারুকা ইউনিয়নের হাসনাবাদ বাজারে দাঁিড়পাল্লা দেয়া-নেয়া নিয়ে হাসনাবাদ গ্রামের কালা মিয়ার পুত্র মানিক মিয়ার সাথে একই গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার পুত্র কাঁচামাল ব্যবসায়ি সৈয়দ আহমদ পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ ব্যক্তি আহত হয়। গুরুতর আহত লায়েক মিয়া (২৬)-কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সৈয়দ আহমদের কাছে দাঁড়িপাল্লা চাইতে মানিক মিয়া সৈয়দ আহমদের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এর ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২০ ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে মানিক মিয়া(৩৫), আসদ আলী (৪৫), মনির (৩০), সৈয়দ (৩৫)-কে ছাতক হাসপাতালে ও অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।