রফিক আহমেদ: দেশে অব্যাহতভাবে হত্যাকা- চলতে থাকায় দেশের মানুষ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও অশান্তিতে বসবাস করছে বলে মন্তব্য করেছে জামায়াতে ইসলামী।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি হামিদুর রহমান আযাদ এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে হামিদ আযাদ বলেন, ‘ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুপুরের রাধামদন মঠের সেবায়েত শ্যামানান্দ দাসকে দুর্বৃত্তদের কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করার বর্বর ঘটনা অত্যন্ত দু:খজনক।
তিনি বলেন, ঝিনাইদহের এ ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো যে, সরকার দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে চরমভাবে ব্যর্থ। দেশে অব্যাহতভাবে হত্যাকা- চলতে থাকায় দেশের মানুষ উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে অশান্তিতে বসবাস করছে। দেশের মানুষের জানমাল, উজ্জত-আবরুর নিরাপত্তা বিধানে সরকারের এ চরম ব্যর্থতা ক্ষমার অযোগ্য।
অপর এক বিবৃতিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে হত্যা করে বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে।
পুলিশ গত ১৬ জুন ঝিনাইদহ পলিটেকনিক কলেজের ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আনিসুর রহমানকে ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা শহীদ আল মাহমুদকে গত ১৩ জুন আটক করার পর থেকে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার কথা অস্বীকার করতে থাকে। কিন্তু গত ৩০ জুন দিবাগত রাত্রে পুলিশ তাদের নলডাংগা ইউনিয়নের তেতুল বাড়ীয়া গ্রামের উত্তরের মাঠে নিয়ে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে। তাদের বর্বরভাবে হত্যা করার পর পুলিশ এখন ভিত্তিহীন মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে যে, তারা তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। নিহতদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার-পরিজন শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। এ ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাদা পোশাকে মানুষকে ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটক রাখে এবং তাদের গ্রেফতার করার কথা অস্বীকার করতে থাকে। যাদের আটক করা হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের উপর দিনের পর দিন অমানসিকভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালায়। জুলুম নির্যাতন চালিয়ে আটক ব্যক্তিদের নিকট থেকে মিথ্যা জবানবন্দী আদায়ে ব্যর্থ হয়ে সরকারের নির্দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের আইন, সংবিধান ও মৌলিক নাগরিক অধিকার প“লিত করে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদের গুলি করে হত্যা করছে।
তিনি আরও বলেন, তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে পূর্ব থেকে আটক নির্দিষ্ট ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউই হতাহত হয় না। এইভাবে নাটক সাজিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে ঝিনাইদহে ইসলামী ছাত্র শিবিরের দু’জন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে সরকার ঝিনাইদহ জেলাকে একটি মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত করেছে। এভাবে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীসহ বিরোধীদলের লোকদের নির্মমভাবে হত্যা করে সরকার দেশকে এক গভীর রাজনৈতিক সংকটের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে রাজনৈতিক হত্যা বন্ধ করার লক্ষ্যে এ ধরনের হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এ ধরনের অন্যায়, অমানবিক ও বে আইনি হত্যাকা-ে জড়িত খুনীদের আজ হোক কাল হোক আইনের আওতায় যথোপযুক্ত শাস্তি ভোগ করতেই হবে।