সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকা থেকে আটক ‘ভূয়া রোহিঙ্গা’ যুবককে তার পিতার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর আগে রবিবার বিকালে তাকে টিলাগড় এলাকা থেকে আটক করা হয়েছিল। পরে সে রোহিঙ্গা নয় প্রমাণিত হওয়ায় তাকে তার পিতার কাছে সমজিয়ে দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নিশ্চিত জানাগেছে সে এখন তার বাড়িতেই রয়েছে। তার স্বজনরা তাকে নজরদারিতে রেখেছেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলার হাদারপাড়ের বিছনাকান্দি সংলগ্ন আসামপাড়া গ্রামে। কয়েস মিয়া নামের (৩০) ওই যুবক আসামপাড়ার সাহেব আলীর ছেলে। সোমবার বিকালে শাহপরাণ থানা পুলিশ তাকে সাহেব আলীর কাছে সমজিয়ে দেন।
রবিবার দুপুরে টিলাগড়ে তাকে রোহিঙ্গা সন্দেহে আটক করেছিলেন স্থানীয়রা। তখন সে রোহিঙ্গাদের মতো কথা বলেছে। ভিনদেশী ভাষায় সে কথা বলছে দেখে মানুষের সন্দেহ হয়। এরকম অসংলগ্ন আচরণের কারণে স্থানীয়রা তাকে রোহিঙ্গা ভেবে পুলিশে সোপর্দ করে দেন। শাহপরাণ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য তাকে চিনতে পারেন।
সুজন আহমদ নামের ওই পুলিশ সদস্য জানান- আটক যুবক কয়েস মিয়াকে তিনি আগে থেকেই চিনেন। তারা একই এলাকার। এমনকি কয়েসের ভাইয়ের সাথে পড়ালেখাও করেছেন তিনি। পুলিশ সদস্য সুজন বলেন- কয়েস মিয়ার মানসিক সমস্যা রয়েছে। সে প্রায় সময়ই এরকম উল্টাপাল্টা আচরণ করে থাকে। এর আগেও সে কুমিল্লা যাওয়ার পথে এরকম আচরণ করেছিল। পরে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ তাকে উখিয়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেন। সেখানে তাকে একরাত রাখার পর সে জানায় যে তার বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাটে।
ওই পুলিশ সদস্য বলেন- তখন উখিয়া থেকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া একটি গাড়িতে করে আবার সিলেট পাঠিয়ে দেয়া হয়। উখিয়া থেকে ফিরে সে রবিবার দুপুরে টিলাগড়ে আসে। তখনই স্থানীয়রা তাকে আটক করেন।
কয়েস আহমদ সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন- ‘আমার মাথাত মাঝেমাঝে খুব সমস্যা করে স্যার। আমি কুন্তা কইতাম ফারি না খেনে যে ইতা খরে।’ মানুষের সাথে কেনো ভিনদেশী ভাষায় কথা বললেন এমন প্রশ্নের উত্তরে কয়েস একই কথা বলেন। তিনি বলেন- আমার মাথার মধ্যে মাঝেমধ্যে সমস্যা করে। তখন আমি এরকম ভাষায় কথা বলি। এটি আমার মনের অজান্তেই হয়। এর আগেও হবিগঞ্জে এরকম হয়েছে। তখন আমাকে রোহিঙ্গা ভেবে উখিয়াতে পাঠিয়ে দিয়েছিলো পুলিশ। পরে সেখান থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা আমাকে একটি ত্রাণ নিয়ে যাওয়া গাড়িতে উঠিয়ে সিলেটে পাঠিয়ে দেন। আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে এমনটি করিনি।’
শাহপরাণ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন- ‘টুলটিকর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সায়েম আহমদ রোহিঙ্গা সন্দেহে তাকে আটক করেন। পরে স্থানীয়রা আমাদের কাছে তুলে দেন। থানায় আনার পর সে জানায় তার বাড়ি গোয়াইনঘাটে। তাকে তার বাবার জিম্মায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
ওসি বলেন- সোমবার কয়েসের বাবা সাহেব আলী শাহপরাণ থানাতে এসেছিলেন। আমরা তাকে সমজিয়ে দিয়েছি।