ওমর শাহ : রাসুল সা. মদিনায় হিজরতের উদ্দেশে রওনা হলেন। এক সময় সাওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় নিলেন। এদিকে মুশরিকরা রসুলের সা. এর পেছনে ছুটল। এ ছিলো মানবতার সুদীর্ঘ সফরের সবচেয়ে নিদারুণ ও চরম সন্ধিক্ষণ। এ ছিলো এমন এক দুর্ভাগ্য যার কোনো শেষ ছিলো না কিংবা এমন এক সৌভাগ্যের সূচনা যার কোনো সীমা ছিলো না।
মানবতা অস্থিরচিত্তে শ্বাসরুদ্ধ করে এবং নিশ্চল ও নিষ্প্রাণ ভঙ্গিতে সেসব গুপ্তচর ও অনুসরণকারীকে অবাক চোখে দেখছিলো যারা সেই মুহূর্তে গুহার মুখে দাঁড়িয়েছিলো এবং এতটুকু বাকি ছিলো যে, তাদের মধ্যে কেউ নিচের দিকে তাকাবে আর তারা রাসুলকে [সা.] দেখে ফেলবে। কিন্তু আল্লাহর কুদরত তাদের ও তাদের পদক্ষেপের মাঝে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো এবং তারা প্রতারিত হলো। তারা দেখলো গুহার মুখে মাকড়সার জাল। ফলে তাদের ধারণাও আসেনি যে, ভেতরে কেউ থাকতে পারে।
এই ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, এরপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় সান্ত¡না নাযিল করলেন এবং তাঁর সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেন, যা তোমরা দেখনি। বস্তুত আল্লাহ কাফেরদের মাথা নীচু করে দিলেন আর আল্লাহর কথাই সদা সমুন্নত এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা তাওবা, আয়াত ৪০)
সেই মুহূর্তে হজরত আবু বকর রা. দৃষ্টি ওপরে উঠতেই মুশরিকদের আসার আভাস পেলেন। তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, তারা আর এক কদমও যদি এগোয় তাহলে আমাদের দেখে ফেলবে। রসুল সা. জবাব দিলেন, সেই দুজনের তোমার কি ধারণা যাদের তৃতীয়জন আল্লাহ?
এ সূত্রেই আল্লাহ তায়ালা এই আয়াত নাযিল করেন, যদি তোমরা তাকে (রাসুলকে) সাহায্য না কর, তবে মনে রেখো, আল্লাহ তার সাহায্য করেছিলেন, যখন তাকে কাফেররা বহিষ্কার করেছিলো, তিনি ছিলেন দুজনের একজন, যখন তারা গুহার মধ্যে ছিলেন। তখন তিনি আপন সঙ্গীকে বললেন বিষন্ন হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। (সূরা তাওবা, আয়াত ৪০) (নবিয়ে রহমত)