সিলেটের সকাল : জাতীয় পার্টির (জাপা) অষ্টম জাতীয় কাউন্সিল আজ। রাজধানীর রমনার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর প্রধান মিলনায়তন ও এর প্রাঙ্গণ ছাড়াও আইইবি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাংশে হতে যাচ্ছে এই কাউন্সিল। সকালে উদ্বোধনী পর্বে এর উদ্বোধন করবেন দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ। দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খানসহ একটি প্রতিনিধি দল গতকাল অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেছেন।
২০০৯ সালের পর অনুষ্ঠেয় এই কাউন্সিলকে ঘিরে এরই মধ্যে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্সাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। কাউন্সিলের বিষয়ে এরশাদ বলেন, ‘জাপা এক ও ঐক্যবদ্ধ, আমাদের মধ্যে আর কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এই কাউন্সিলে দলের সকল নেতা আসবেন। কাউন্সিল হবে জাঁকজমকপূর্ণ। কাউন্সিল থেকে আমরা দেশবাসীকে এই বার্তা দেব—জাপা ঘুরে দাঁড়িয়েছে, জেগে উঠেছে। আমরা আমাদের শক্তি দেখাতে চাই।’
কাউন্সিলের সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জাপা মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। আশা করছি একটা ভালো কাউন্সিল হবে। কাউন্সিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিদেশি কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করছি ব্যাপক লোক-সমাগম হবে, সব মিলিয়ে উত্সবমুখর পরিবেশে কাউন্সিল রূপ নেবে মহোত্সব ও মিলনমেলায়। কাউন্সিল থেকে নবউদ্যম নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন সারাদেশ থেকে আসা নেতা-কর্মীরা।’
জানা গেছে, দলের ৭৬টি সাংগঠনিক জেলা থেকে ১৯ হাজার ৭শ কাউন্সিলর ছাড়াও প্রায় ২০ হাজার ডেলিগেট যোগ দেবে কাউন্সিলে। সব মিলিয়ে ৫০ হাজার লোকের সমাগম ঘটানোর টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে। জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘জাপায় সৃষ্ট বিভাজন দূর হয়ে যাওয়ায় কাউন্সিল ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্সাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।’ জাপার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানান, রওশন এরশাদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান করার পর দলের বিভক্তি আপাত নেই। এই কারণে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় তুষ্ট, ক্ষুব্ধ, সংক্ষুব্ধ সব নেতাই শেষ পর্যন্ত যোগ দিচ্ছেন শনিবারের কাউন্সিলে। রওশনের পাশাপাশি যাচ্ছেন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও। জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, ‘আমরা সবাই কাউন্সিলে যাব, এটা দলের কাউন্সিল, না যাওয়ার কোনো কারণ নেই।’
কাউন্সিলে চেয়ারম্যান হিসেবে এরশাদ পুনর্নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এছাড়া নতুন করে গঠনতন্ত্রে ‘সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান’ ও ‘কো-চেয়ারম্যান’ পদ অন্তর্ভুক্ত করে তা অনুমোদন করা হবে। ‘মহাসচিব’ পদে রুহুল আমিন হাওলাদারই থাকছেন। গঠনতন্ত্র সংশোধন উপ-কমিটির প্রধান ও জাপার কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানান, এ ছাড়াও গঠনতন্ত্রে আরো কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাপার সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘এটা শুধু কাউন্সিল নয়, এটি হবে বিরাট শো-ডাউন ও শক্তির প্রদর্শন। যা দলকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাবে।’ ঢাকা মহানগর জাপার সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে জানান, জাপার রাজনৈতিক পিতা-মাতা এরশাদ-রওশন ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় কাউন্সিলকে ঘিরে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।