মাছুম বিল্লাহ : বিএনপির নয়া কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী আসলাম চৌধুরী সরকার উৎখাতে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছেন-এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র বলেছে, ‘আলোচনায় আসতে মোসাদ নাটক করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন আসলাম চৌধুরী। পাশাপাশি তিনি দলকেও বেকায়দায় ফেলেছেন।’
সূত্রটি জানায়, নতুন কমিটিতে আসলাম চৌধুরী যুগ্ম সম্পাদক হওয়ায় বিএনপির মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। তাকে নিয়ে বিএনপির মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। চট্টগ্রামের একটি থানা কমিটির যুগ্ম আহব্বায়ক ও সাবেক শিবির নেতা কি করে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেল। এছাড়াও বিগত আন্দোলন-সংগ্রামেও তার উল্লেখযোগ্য ভুমিকা নেই।
অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারপারসনের একজন বিশেষ সহকারিকে ম্যানেজ করে তিনি এ পদ পেয়েছেন। কারন ওই বিশেষ সহকারি শ্যালক ও বোনজামাই আসলাম চৌধুরীর কোম্পানিতে চাকুরি করে।
এ ছাড়াও একজন যুগ্ম সম্পাদকের আত্মীয় তার কোম্পানী চাকুরি করেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি যুগ্ম সম্পাদকের পদ হাসিল করেছেন। এসব অভিযোগ ও সমালোচনা ঢাকতেই আসলাম চৌধুরী দিল্লিতে গিয়ে মোসাদ নাটক সাজিয়েছেন বলে বিএনপির সূত্রটির দাবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, ‘সে (আসলাম চৌধুরী) ইস্পাতের ব্যবসা করে। আর পৃথিবীর মধ্যে ডায়মন্ড, স্বর্ণ, তুলা, কয়লা ও ইস্পাতের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে ইহুদীরা। সেই সূত্র ধরে দু-একজন ইহুদী ব্যবসায়ীর তার পরিচয় থাকতে পারে। এ বিষয়টা কাজে লাগিয়ে সে মোসাদ নাটক মঞ্চস্থ করছে। যাতে করে সে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে আসতে পারে এবং তার পদ নিয়ে যেন সমালোচনা না হয়।’
তিনি জানান, সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে চৌকস ও প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। তারা কখনো মিটিং- সিটিং করে পরিকল্পনা করবে না এবং পরিকল্পনার পর একসঙ্গে ছবিও তুলবে না। অতএব, এ বিষয়টি যে পরিকল্পিত তা সহজেই অনুমেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা দাবি করেন, সরকার উৎখাতে মোসাদ কানেকশনের বিষয়টি সরকারের পরিকল্পিত। আর তাতে আসলাম চৌধুরী সরকারের হয়ে কাজ করেছেন। তার যদি মোসাদের সঙ্গে সত্যিকারে যোগাযোগ থাকতো। তাহলে তিনি এতদিন গ্রেফতার হতেন।
ওই নেতার দাবি, একশো কোটি টাকার ঋণখেলাপি হয়েও এ সরকারের সময় বহাল তবিয়তে আছেন। আন্দোলন শুরুর আগেই তিনি গ্রেফতার হন। পরিবেশ শান্ত হলে জামিনে বের হন। এমনই চরিত্র আসলাম চৌধুরীর।
তবে আসলাম চৌধুরী এসব অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই বলে উল্লেখ বলেন, ‘আমি যখন দিল্লি সফর করি তখন আমি যুগ্ম সম্পাদক ছিলাম না। ঢাকায় ফেরার পর আমাকে যুগ্ম সম্পাদক করা হয়। আর চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারি ও যুগ্ম সম্পাদকের কোন আত্মীয় আমার কোম্পানিতে চাকুরিও করে না। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’