জাফর আহমদ : সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করতে চাননি। তার প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের প্ররোচনায় এরশাদ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছেন। এ কথা বলেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। গতকাল দৈনিক আমাদের অর্থনীতির নিয়মিত বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, নির্বাহী সম্পাদক বিশ্বজিৎ দত্তসহ পত্রিকার সাংবাদিকরা।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অন্যান্য ধর্মালম্বীদের রাষ্ট্রহীন করা হয়েছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আমরা এরশাদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি আমাদের বলেছিলেন ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার জন্য তিনি দুঃখিত। এটা তিনি করতে চাননি। কাজী জাফর আহমেদের পরামর্শে তিনি ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করতে বাধ্য হয়েছিলেন। কাজী জাফর আহমেদ এরশাদকে বলেছিলেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে টাকা পাওয়া যাবে, মধ্যপ্রাচ্যের সহানুভূতি পাওয়া যাবে। বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের কাছে থেকে সহানুভূতি পাওয়া যাবে। এখন যদি সরকার রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের জন্য সংসদে বিল ওঠায় তাহলে ওই বিলে সম্মতি দেবেন বলে রানা দাশগুপ্তকে জানিয়েছেন এরশাদ।
রানা দাশগুপ্ত আরো বলেন, ১৯৭১ সালে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা মিলে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। স্বাধীন দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম, জীবন দিয়েছিলাম। জীবনের বিনিময়ে একটি ভূখ-, একটি পতাকা অর্জন করেছিলাম, রাষ্ট্রহীন হওয়ার জন্য নয়। ধর্ম-দল-মত ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার জন্য। জেনারেলর এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার মধ্য দিয়ে অন্য ধর্মের মানুষকে রাষ্ট্রহীন করেছেন। রানা দাশগুপ্ত প্রস্তাব করেন, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়েছে। এবার অন্যান্য সকল ধর্মকেও রাষ্ট্রধর্ম করা হোক। তাহলে দেশে আর ধর্মগত সংখ্যালঘু থাকবে না। রাষ্ট্র হবে সকল ধর্মের।
সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী