ষঢাকা: দর্শক খরায় বানিজ্যিক চলচ্চিত্রগুলো হল থেকে নামিয়ে দিচ্ছে প্রদর্শকরা। ফলে বিকল্প প্রদর্শনীতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক নির্মাতা ও প্রযোজক। এসব সিনেমা প্রদর্শন চলছে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমী ও মিলনায়তনগুলোতে। বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বিকল্প প্রদর্শনী নিয়ে শুরু হয়েছে বিরোধীতাও। সম্প্রতি এ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ এর সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসাইন মামুন ও নির্মাতা প্রসূন রহমান।
স্বাধীনতার পর থেকেই জেলাশহর ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিল্ম ক্লাবের উদ্যোগে বিকল্পধারার সিনেমাগুলো প্রদর্শিত হয়ে আসছে।বানিজ্যিকধারার সিনেমার বিপরীতে বিকল্পধারার সিনেমাগুলো হল পেতো খুব কম। আর বিকল্পধারার সিনেমার বেশিরভাগ লগ্নিদাতাই নির্মাতা নিজে। সে কারণেই বিকল্প প্রদর্শনী থেকে কিছু অর্থ আসতো। কিন্তু এসব জায়গায় বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের প্রদর্শন ঘটলে তাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিবে বলে মনে করছেন সমালোচকরা।
সাম্প্রতিককালে ‘জিরো ডিগ্রী’, ‘অগ্নি-টু’, ‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর মতো নাচে গানে ভরপুর সিনেমার বিকল্প বাণিজ্যিক প্রদর্শন হয়।সমালোচকদের মতে, বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বিকল্প প্রদর্শনীর স্থান হিসেবে শিল্পকলা একাডেমি বা স্থানীয় মিলনায়তনগুলোর মতো যেসব জায়গায় প্রদর্শিত হচ্ছে তা স্বাভাবিক সংস্কৃতি চর্চার জন্য হুমকিস্বরূপও বটে।
সম্প্রতি, রেদোয়ান রনি নির্মিত ‘আইসক্রিম’ চলচ্চিত্রের বিকল্প প্রদর্শনকে পুঁজি করেই শুরু হয়েছে এ আলোচনা। ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ এর সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসাইন মামুন এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, ‘কিন্তু গত কিছুদিন ধরে আমরা দেখছি একেবারে চিহ্নিত ‘বাণিজ্যিক’ চলচ্চিত্র সিনেমা হলের বাইরে বিভিন্ন মিলনায়তন ভাড়া করে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। সেই প্রদর্শনীর টিকেটের দাম রাখা হচ্ছে ১০০/২০০ টাকা! এই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে স্থানীয় কিছু ভূঁইফোঁর ‘সংস্কৃতিকর্মী’দের তাদের দেয়া হচ্ছে প্রদর্শনীর লাভের ‘পারসেন্টেজ’! ফলে এটা যেন হয়ে উঠেছে নতুন একটি ব্যবসাক্ষেত্র! -সূত্র: দ্য রিপোর্ট
এদিকে আইসক্রিম চলচ্চিত্রের নির্মাতা এ ধরণের সমালোচনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন।
নিজের অবস্থান বাংলামেইলের কাছে স্পষ্ট করে রনি বললেন, ‘বিকল্প প্রদর্শনীর জন্য একটি সিনেমার কী কী যোগ্যতা লাগে তার একটি নীতিমালা তৈরী করা উচিত। আমরা তরুণ নির্মাতারা স্ট্রাগল করে একটা সিনেমা বানাচ্ছি। সিনেমাটা আমরা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে দেখাবো। প্রয়োজনে ফ্রি দেখাবো, ইন্টারনেটে ছাড়বো, টিভিতে দেখাবো। বিকল্প প্রদর্শনী নিয়ে এ নিয়ম কে তৈরী করলো? কবে থেকে চালু হলো? পৃথিবীর কোন দেশে বিকল্প প্রদর্শনীর নিয়ে কোন বিধিনিষেধ নেই। শুধু সিনেমা নয়। সেটা যে কোন শিল্প হতে পারে। হতে পারে নাটক, হতে পারে পেইন্টিংস। শিল্প তো। আমি তো আর ব্লু ফিল্ম চালাচ্ছিনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেন্সরবোর্ড ছবিটির ছাড়পত্র দিয়েছে। তাহলে তারা বাধা দেয়ার কে? শিল্পকে বাধা দেয়াকে আমি পাপ মনে করি। যারা বাধা দিচ্ছে তারা শিল্প চর্চার ধারক বাহক নয়। ছবিটি দর্শকরা আসলে নেবে কিনা সেটা দর্শকরাই সিলেক্ট করবে। তারা বলার কে? যারা শিল্পচর্চাকে বাধা দেয় তাদের চলচ্চিত্রশিল্পী মনে করিনা। পৃথিবীতে কোথাও শিল্পকে বাধাগ্রস্থ করা হয়না। এটা শুধুমাত্র বাংলাদেশের তথাকথিক চলচ্চিত্রকর্মীদের পক্ষেই সম্ভব।’(বাংলামেইল)