হাসান আরিফ : প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ বাড়াতে ইউরো ও পাউন্ডে বন্ড ছাড়া হচ্ছে না। কোন কারণে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি হলে প্রচলিত নিয়মেই সভরেন্ড বন্ডের মাধ্যমেই তা সংগ্রহ করা হবে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের এই সংক্রান্ত প্রস্তাব গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে না করে দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে ইউরো ও পাউন্ড স্টার্লিং মুদ্রায় প্রিমিয়ার ও ইনভেস্টমেন্ট নামে চারটি বন্ড ছাড়ার কথা বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ এই প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার কোনো ঘাটতি নেই। ফলে এখন বন্ড ছাড়ার প্রয়োজন নেই। বর্তমানে এ ধরনের বন্ডের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও মতামত দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারের সুদ হারের অবস্থা, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও অন্যান্য মুদ্রার সঙ্গে টাকার বিনিময় হার মূল্যায়ন করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ও ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহের জন্য এ বন্ড ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
সূত্র জানায়, ইউরো প্রিমিয়াম বন্ডের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। এটির মুনাফা দেশীয় মুদ্রায় দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পাউন্ড স্টার্লিং ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল সাড়ে ৬ শতাংশ। এর মুনাফা পাউন্ড বা ডলারে নেওয়া সুযোগ রাখা হয়েছিল। দুটি বন্ডের মেয়াদ ধরা হয়েছিল তিন বছর। মেয়াদ শেষে মুনাফাসহ মূল টাকা যে কোনো দেশে নেওয়ার বিধান ছিল। দুটি বন্ডই প্রবাসীদের জন্য যে কোনো পরিমাণে কিনার সুযোগ রাখা ছিল।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রবাসীদের কাছ থেকে ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড ও ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডের মাধ্যমে বিশেষ করে ডলারে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২০০২ সালে এ বন্ড দুটি বাজারে ছাড়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রিমিয়াম বন্ডের সুদের হার সাড়ে ৭ শতাংশ এবং ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের সুদের হার সাড়ে ৬ শতাংশ। প্রবাসীদের জন্য ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড নামে আরও একটি বন্ড চালু রয়েছে। এর সুদের হার ১২ শতাংশ। প্রবাসীরা এসব বন্ড বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক, বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংক, এক্সচেঞ্জ হাউস ও প্রতিনিধিত্বকারী ব্যাংকগুলোর শাখা থেকে কিনতে পারছেন।
সূত্র জানায়, আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা ডলার বন্ড কেনার ব্যাপারে আগ্রহী। কিন্তু ইউরো অঞ্চল ও ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা এ বন্ড কেনার ব্যাপারে আগ্রহী নয়। কারণ ইউরো অঞ্চল ও ব্রিটেন থেকে ডলারে বন্ড কিনতে হলে তা হবে বৈদেশিক মুদ্রায় কেনা। ফলে এর জন্য সে দেশের বাড়তি কিছু নীতি মেনে চলতে হয়। ইউরো ও পাউন্ডে বন্ড ছাড়া হলে ওই অঞ্চলের বাংলাদেশি প্রবাসীরা স্থানীয় মুদ্রায় সহজেই এগুলো কিনতে পারতেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ৯ শতাংশ আসে ইউরো অঞ্চল এবং ৪ শতাংশ আসে ব্রিটেন থেকে। এর বাইরে হুন্ডির মাধ্যমে আরও রেমিটেন্স আসছে ওইসব অঞ্চল থেকে। সম্পাদনা : লিয়াকত আমিনী