গাজী মিরান : বজ্রপাতে মানুষের প্রাণহাণী হওয়া সত্ত্বেও সরকার এটাকে দুর্যোগ বলছে না কেন, বলে প্রশ্ন করলেন ‘দুর্যোগ ঝুঁকি বিশ্লেষক’ ড.এস এম মোর্শেদ।
যমুনা টেলিভিশনের ‘২৪ ঘন্টা’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার যতগুলো আইনী এবং জাতীয় পরিকল্পনাসহ যে বিধিগুলো রয়েছে তার কোথাও বজ্রপাতকে সরকারি ভাবে দুর্যোগ হিসেবে স্বীকার করা হয়নি। যেখানে গত ১০ বছরে আইলা এবং সিডরের কারণে মৃত্যুর হয়েছে তার তুলনায় বজ্রপাতের এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
ড.এস এম মোর্শেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি এবং পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গড়ে প্রতি বছরে বজ্রপাতে ৫’শ জন লোকের প্রাণহাণী হয়। যা বিশ্বের সব দেশের তুলনায় বেশি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে যে তথ্য আছে সেখানেও বালা হয়েছে, ২০১৪ সালে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা ২৭৫ জন। যা বেড়ে ২০১৫ সালে সংখ্যা দাড়ায় ২৮৫ জনেরও বেশি। যা যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাটির হিসাব অনুসারে অর্ধেকের কম।
তিনি আরও বলেন, এই অবস্থায় আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এই বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর পরেও সরকারি পরিভাষায় এটা দুর্যোগ বলা হচ্ছেনা কেন? এমনকী জাতীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা আইনেও দুর্যোগের বিষয়টি উল্লেখ নেই কেন?
ড.এস এম মোর্শেদ বলেন, যেখানে সরকারি গাইড লাইনে বলা আছে, যদি কেউ বন্যা বা সাইক্লোনে মারা যায় তাহলে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিক ভাবে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা মানবিক সহায়তা দেবে। কিন্তু তার বাস্তবরূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না কেন?
তিনি বলেন, বজ্রপাতে যখন এত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তখন সরকারি পরিভাষায় যদি তা কোন দুর্যোগ বলে বিবেচিত না হয় তাহলে মৃত ব্যক্তির পরিবার সরকারের কাছে কি আশা করতে পারে?
ড.এস এম মোর্শেদ বলেন, বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা যেভাবে বেড়েই চলছে তাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে এটাকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আইনগুলোর মধ্যে বজ্রপাতের বিষয়টা যুক্ত করতে হবে এবং অবশ্যই এটা দুর্যোগ হিসেবে স্বীকার করতে হবে। এবং বাংলাদেশে বজ্রপাতের বিষয়ে পর্যাপ্ত কোন গবেষণা নেই। যা আমার মনে হয় খুব দ্রুত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এই বিষয়ে গবেষণা করতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে যেটা খুব জরুরি।