আরিফুর রহমান: আদালতের নতুন নির্দেশনার কারণে মামলার রায়ের পরও সন্তানের দেয়া ভরণ-পোষণের টাকা পাচ্ছেন না এক বৃদ্ধ দম্পত্তি। এই টাকা পড়ে আছে সরকারি কোষাগারে। অথচ চরম অর্থসংকটে দিন কাটাচ্ছেন ঐ দম্পত্তি। টাকা আদায়ে সরকারি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মাসখানেক আগেও চলাফেরা করতে পারতেন অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মচারী ওয়াজেদ আলী। ছেলেদের কাছ থেকে ভরণ-পোষণের টাকা আদায়ে মামলা লড়তে আদালতে দৌড়-ঝাঁপ করেছেন একাই। কিন্তু এখন হারিয়ে ফেলেছেন বেঁচে থাকার আগ্রহ।
ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘আমি মরে যাব, বাঁচবো না, বেঁচে থেকে লাভটা কি?
ডেমরার ধার্মিক পাড়ায় ভাড়া ঘরে অসুস্থ অবস্থায় রাত-দিন কাটে ওয়াজেদ আলীর। চিকিৎসাতো দূরের কথা, দু বেলা খাবার জোটাতেই হিমসিম খাচ্ছে স্ত্রী সায়েদা বেগম।
সায়েদা বেগম বলেন, ‘বাড়িওয়ালা তিন মাসের বাসা ভাড়া পাবে। দিতে পারি না, কোথা থেকে দেব। আমার কোন আশা নাই। ছেলেদের ওপর আশা করতাম সেটাও চলে গেল’।
২০১৪ সালে ভরণ-পোষণের মামলায় আদালতের আদেশে ছেলেদের কিস্তির টাকায় কোনমতে দিন কাটত এই দম্পতির। কিন্তু হঠাৎ করে আদালতের নতুন সিদ্ধান্তে বেকায়দায় পড়েন তারা।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার আইনজীবী আলী আকবর বলেন, ‘রায়টা এরকম দিছে যে ২০১৩ সালের আইনে স্পষ্ট বলা নাই জরিমানার টাকা ভিক্টিমকে বা বাপ-মাকে দেওয়া যায়’।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত যেটা বলেছেন উনি নির্ধারণ করে দিতে পারেন না, অর্ডারে পরিষ্কার লিখে দেওয়া উচিত যে এই টাকাটা মাসিক দিতে হবে। দরখাস্ত দিক এই কেসটা আমি নিয়ে নেব’।
কোনরকমে খেয়ে-পড়ে বাঁচতে চাওয়া এই বাবা-মা এতকিছুর পড়েও সন্তানদের অমঙ্গল চান না। একবারের জন্য হলেও দেখতে চান সন্তান আর নাতী-নাতনিদের।
সূত্র: ইনডিপেনডেন্ট টিভি.