ফারুক আলম: দেশে মোবাইল শিল্প গড়ে তুলতে জমি দেয়াসহ সব ধরনের সহযোগিতা করবে সরকার। বড় শিল্প খাত গড়তে ইকোনমিক জোনে জায়গা দেবে সরকার, ছোট শিল্প তৈরি করতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জায়গা থেকে জমি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
রোববার বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস-২০১৬ উপলক্ষে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) আয়োজিত ‘দেশিয় উদ্যোগে মোবাইল ফোন শিল্প গড়ে তুলার এখনই উপযুক্ত সময়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ফোন আমদানি হচ্ছে। দেশের টাকা বিদেশিদের হাতে চলে যাচ্ছে। তাই আপনারা যদি দেশে এ শিল্প গড়ে তোলেন তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু বলেন, ১০ হাজার কোটি টাকার মোবাইল ফোন ও এক্সোসরিজ বাজারে রয়েছে। এর অধিকাংশ আসছে চীন থেকে। ফলে বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা দেশের বাহিরে চলে যাচ্ছে। অথচ দেশেই মোবাইল ফোন তৈরির সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ফোন আমদানি করার সময় বিমানবন্দর কিংবা স্থলবন্দর চেকপোস্টগুলোতে তল্লাসির নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হয়। এই হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
নিজাম উদ্দিন জিটু আরো বলেন, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অনেক সময় উচ্চমানের সেট দেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করছে। এসব অনুপ্রবেশ কঠোর হস্তে বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি দেশে যাতে গুণগতমানের মোবাইল ফোন উৎপাদন করা হয় সেই ব্যবস্থা জরুরি।
মোবাইলশিল্প গড়ে তুলতে সরকারের কাছে হাইটেক পার্কের মতো অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পাশাপাশি বিদেশ থেকে মোবাইল আমদানিকে নিরুৎসাহিত করার দাবি জানানো হয় সভায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে। দেশে বর্তমানে ই-লানিং, ই-ম্যানেজমেন্ট, ই-গভর্নেন্স, ই-কমার্স, ই ব্যাংকিং, ই-প্রকিউরমেন্ট ও ই-টেন্ডারিং চালু হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড় রোডম্যাপ বাস্তায়বনের সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে মোবাইল ফোন। বর্তমানে দেশে ১৩ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোনের গ্রাহক রয়েছে। সেই দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের ১০ম তম স্থানে রয়েছে। আর প্রায় ৬ কোটি মানুষ ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
তথ্য অনুযায়ী, মোবাইল ফোন আমদানিতে ভ্যাট, কাস্টমসহ শুল্ক দিতে হয় ২১.৭৫ শতাংশ। এর সঙ্গে এআইটি ধরা হয় ২ শতাংশ। বাংলাদেশে ফোন তৈরি করলে কাঁচামাল ও যন্ত্রাংশের গড় শুল্ক দাঁড়ায় প্রায় ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ দ্বিগুণ শুল্ক দিতে হয়। এজন্য উদ্যোক্তারা উচ্চ শুল্কের ঝুঁকি নিয়ে মোবাইল ফোন তৈরিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। অথচ দেশে উচ্চ প্রযুক্তিতে ফোন তৈরি হলে আমদানিবাবদ বিশাল বৈদেশি মুদ্রা সাশ্রয় হবে। দেশিয় মোবাইল ফোন রপ্তানি করতে পারবো। অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএস) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমেদ, সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।