সিলেটের সকাল ডেস্ক : কুমিল্লায় কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর মরদেহ থেকে নেয়া বিভিন্ন আলামত ডিএনএ পরীক্ষার পর তাকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। এছাড়াও তনুর পেন্টি, কাপড় ও শরীরে গোপনাঙ্গ এবং রক্তের ডিএনএ প্রতিবেদনে ৩ ব্যক্তির বীর্য পাওয়া গেছে। সোমবার রাতে কুমিল্লা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও জানান, কুমেকের ফরেনসিক বিভাগের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদেরকে ডিএনএ প্রতিবেদন সরবরাহ করতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে ডিএনএ প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে হত্যার আগে তনুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, এ বিতর্কের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
জানা যায়, গত ২০ মার্চ সোহাগী জাহান তনুকে হত্যা করে কুমিল্লা সেনানিবাসের পাওয়ার হাউজ এলাকার পাশের একটি জঙ্গলে লাশ ফেলে দেয় ঘাতকরা। পুলিশ,ডিবির পর বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। গত ২৮ মার্চ ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের জন্য তনুর লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত ৩০ মার্চ তনুর লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
গত ৪ এপ্রিল কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে দেয়া প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ডিএনএ রিপোর্টে তনুকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের নিকট এ বিষয়টি নিশ্চিত করায় সকল বিতর্কের অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
এর আগে তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের ৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড তনুর কাপড়, দাঁত, নখের ডিএনএ ও ফিঙ্গার প্রিণ্টের প্রতিবেদন চেয়ে সিআইডি’র নিকট চিঠি প্রেরণ করে। কিন্তু ওই প্রতিবেদন সরবরাহে সিআইডি অপারগতা প্রকাশ করে আসছিল। সর্বশেষ গত রোববার ডিএনএ প্রতিবেদন চেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের নিকট চিঠি প্রেরণ করেন দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত ৩ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের সভাপতি ও কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা ওরফে কেপি সাহা। ওই চিঠিটি অবগতির জন্য কুমিল্লার ১নং আমলী আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকটও প্রেরণ করা হয়। ওই পত্রে সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য পুনরায় কবর থেকে লাশ উত্তোলনের পর তদন্ত সংস্থা সিআইডি কর্তৃক সংগৃহীত নমুনার ৪টি দাঁত, ৪টি ভেজাইন্যাল সোয়াব, ডিএনএ অ্যানালাইসিস ও পরীক্ষার প্রতিবেদন চাওয়া হয়।
সোমবার রাতে কুমিল্লা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান সাংবাদিকদের আরও জানান, ফরেনসিক বিভাগ এতো দিন ডিএনএ রিপোর্টের জন্য ২য় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিতে বিলম্ব করে আসছিল, তাই এখন তাদের চাহিদা মতো ডিএনএ রিপোর্ট সরবরাহ করা হচ্ছে, তাই ২য় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট তারা শিগগিরই প্রদান করবে বলে আশা করছি।