সীমান্ত আরিফ: কর্ণফুলী। একটি নদী। জন্ম যার আসামের লুসাই পাহাড়ে। চট্টগ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ ভূভাগ সিক্ত করে বঙ্গোপসাগরে যুক্ত হয়েছে মহামিলনের পরম বাসনায়। কর্ণফুলী বিস্তীর্ণ ভূভাগের মাটিকে দিয়েছে সঞ্জীবনী শুধা। অথচ যে জীবন শুধা বয়ে এনেছে এ নদী তা বিদীর্ণ হয়েছে মানুষের প্রলুব্ধ হাতের সৃষ্ট দেয়ালে।
লোভাতুর জীবনের ক্লেদ থামিয়ে দিচ্ছে এই জনপদের স্পন্দন। রুপাই এবং গোরা দুই পাড়ের দুই ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা দুই প্রাণচঞ্চল যুবা। সুদীর্ঘ কাল থেকে গড়ে ওঠা গঞ্জের এক প্রতিষ্ঠিত সওদাগর রুপাই এর পিতা। আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য আর জাহাজ তৈরির কারখানা নিয়ে তার কারবার। অপর পাড়ে গ্রামীণ যুবা গোরার বাড়ি। গোরা আর রুপাই এর প্রেমতরী ছুটে চলে দূর সাগরে।
কিন্তু হটাত ঝড়ো হাওয়ায় ভেঙ্গে পড়ে পাল তোলা সেই তরী। সমাজ সংস্কার আর আত্মঅহমপূর্ণ রক্ষণশীল পিতার রোষানলে রক্তাক্ত হয় গোরা। গোরার প্রেমস্পর্শে পাপড়ি মেলেছিল যে প্রেমপুস্প, এক আসুরিক তা-বে সে বাগান দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে পড়ে। সমাজ সংস্কারের প্রতি তীব্র ঘৃণা, পিতৃপুরুষের রক্ষণশীলতার প্রতি তীব্র ক্ষোভ রুপাইকে দগ্ধ করে। পোড়া মন নিয়ে সে ছুটে বেড়ায় কর্ণফুলীর পাড়ে। কর্ণফুলীর এপারের বিদ্যমান মানবসৃষ্ট সঙ্কট ওপারের অপার সৌন্দর্যের প্রাকৃতিক নিসর্গের ধ্বংসলীলা উঠে এসেছে কর্ণফুলীর সাতকাহন গল্পটিতে।
মানুষের প্রলুব্ধ হাতের সৃষ্ট দেয়ালে লোভাতুর জীবনের ক্লেদ নষ্ট করছে কর্ণফুলীর ওপারের জনপদ। তারই প্রতিবাদের প্রতীকী রুপ ছিল গোরা। রাহাত কবির এর চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় “কর্ণফুলীর সাতকাহন” নাটকটিতে মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ ও উরমিলা শ্রাবন্তি কর। আরো আছেন আতাউর রহমান, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, শাহিনুর সারওয়ার, সাইফুল আলম বাবু, কঙ্কন দাস এবং নাসির উদ্দিন খান। চ্যানেল আই তে আগামী ১৮ মে দুপুর ৩ টা ৫ মিনিট এ প্রচারিত হবে কর্ণফুলীর সাতকাহন নাটকটি।