ইসমাঈল হুসাইন ইমু : পরিকল্পিত নগরায়ন ও জনসচেতনতা বাড়লে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে হ্রাস সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মদ।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ও ডিফেন্স অধিদপ্তরের আয়োজনে ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাসে করণীয় ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক মত বিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ) লে. কর্ণেল মোহম্মদ মোশারফ হুসেন। এসময় অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলী আহাম্মদ বলেন, ভূমিকম্প বন্ধ করা সম্ভব নয়, তবে মানুষের মাঝে ভীতি দূর করা সম্ভব। যেসব ভবন, কমিউনিটি সেন্টার ও আবাসিক ভবনের রেকটিফাই করা হয়নি সেগুলোকে দ্রুত রেকটিফাই করার অনুরোধ করেন ডিজি।
ফায়র সার্ভিসের ডিজি বলেন, বিল্ডিং কোড অনেক ভবন মানলেও কিছু ব্যক্তি মানছে না। কোন বিল্ডিং তৈরির পর ওকুপাইড সার্টিফিকেট ফায়ার সার্ভিস থেকে প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু কোন কোনো ভবনের মালিক এ সার্টিফিকেট নিচ্ছে না। তবে গ্যাপটা পূরণ করার জন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তাও নিচ্ছি। ঢাকার ফায়ার স্টেশনগুলোকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি বিশতলা পর্যন্ত আগুন নেভানোর উপযোগী কয়েকটি গাড়ি কেনা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও কেমিক্যাল ফায়ার নিয়ন্ত্রণেও ফায়ার ফাইটার রয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ডিজি।
এসময় বক্তারা বলেন, জন সচেতনতা ও পরিকল্পিত নগরায়ন ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারে। তারা বলেন, ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিরূপণের জন্য বিভক্ত সিসমিক জোনে ঢাকার অবস্থান মধ্যবর্তী জোনে হওয়ায় তেমন ক্ষতির আশংকা ছিল না। কিন্তু জনসংখ্যার আধিক্য, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে ঢাকায় ব্যাপক ক্ষতির আশংকা রয়েছে। তবে স্থাপনা নির্মাণে যথাযথ নিয়ম মেনে চললে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব।
ফায়ারের ঘটনার সময় সাংবাদিকরা যাতে ওই ঘটনা সম্পর্কে যে কোন তথ্য সহজে পেতে পারে তার জন্য একটি আলাদা মিডিয়া সেল করারও পরামর্শ দেন বক্তারা।
এছাড়াও আপদকালীন সময়ে রিজার্ভ পানির আধারের সংখ্যা বাড়ানো, প্রাকৃতিক পানির উৎস হিসেবে সকল পুকুর, খাল, নদী ও সুইমিং পুলগুলো ব্যবহার, দেশের সকল ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় পাঁচ মিনিট করে ভূমিকম্পের সময় করণীয় কি কি এ নিয়ে প্রচার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে ভূমিকম্প ও দুর্যোগ প্রতিরোধে পাঠ্যসূচিতে পাঠ্যক্রম চালুরও উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দেন বক্তারা।