ওমর শাহ : ‘দুনিয়া আখেরাতের শষ্যক্ষেত্র।’ এ দুনিয়ার ফসল ভালো হলে আখেরাতের ফলাফলও ভাল হবে। আর এ দুনিয়ার ফসল খারাপ হলে আখেরাতের ফলাফলও খারাপ হবে। সকল লাভ লোকশানের হিসাব গুনতে হবে এ দুনিয়া থেকেই। পরকালের ফলাফল ভোগ করার জন্য। মৃত্যু এসে গেলেই সকল আমলের দরজা বন্দ হয়ে যাবে। শুরু হবে হিসাব নিকাশ। তাই ভাল মন্দের হিসাব আজকের দিন থেকেই শুরু করা প্রতিটি মুমিন মুসলমানের কর্তব্য।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন, তাঁর। শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর। অতঃপর তাকে তার অসৎ কর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়। এবং যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থমনোরথ হয়। (সুরা শামস : ৬, ৭, ৮, ৯, ১০) পৃথিবীতে দুপথেই মানুষ চলার ক্ষমতা রাখে। ভাল মন্দ সব ক্ষমতাই মানুষকে প্রদান করা হয়েছে। আর ক্ষমতা প্রদান বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য। কে আল্লাহর নির্দেশ পালন করে আর কে আল্লাহর অপছন্দনীয় পথে চলে। রাসুল সা. তাঁর গোটা উম্মতের জন্য ভাল মন্দকে স্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন। রাসুল সা. ইরশাদ করেন, ‘আমার পরে আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যারা উক্ত দুটি জিনিস আঁকড়ে ধরবে। অর্থাৎ এ দুটি বিষয় অনুযায়ী জীবন চালাবে তারা কখনো গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি ‘আল্লাহর কিতাব তথা কুরআনুল কারিম’।
প্রশ্ন হতে পারে আল্লাহ তায়ালা তাহলে পৃথিবীতে এত এত আকর্ষনীয় বস্তু সৃষ্টি করলেন আবার এর থেকে বিরত থাকতেও বললেন। কেন? এসব বিষয় সৃষ্টি না করলেই তো হতো। হুম! মন্দ না থাকলে ভাল জিনিসের মর্ম বুঝা কঠিন। মূলত পরীক্ষার জন্যই ভাল মন্দ পাশাপাশি রেখেছেন। তিনি দেখেন বান্দা কোনটা গ্রহণ করে। আল্লাহ ধন-সম্পদ, ক্ষমতা ইত্যাদি দিয়ে পরীক্ষা করেন যে, কারা এসব বস্তুর আকর্ষণ ছেড়ে দ্বীনের আকর্ষণে আকর্ষিত হয়ে আল্লাহমুখী হয়। তিনি মানুষকে আরও দান করেছেন সুস্থ-জ্ঞান। যাতে মানুষ নিজের মেধা খাটিয়ে নিজের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে এবং সঙ্গে সঙ্গে তার সৃষ্টিকর্তার ওপর সম্পূর্ণ রূপে ঈমান আনে। সে ঈমান হতে হবে পাকাপোক্ত। এ ঈমান দূর করে দেবে জীবনের সকল পাপ পঙ্কিলতা। কোনো ধরণের মোহ দূর করে দেবে না আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অনুসৃত পথ থেকে। ঈমান হবে সকল কাজের প্রধান উৎস। মুমিনের প্রতিটি কাজই হবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে।