নিজস্ব প্রতিবেদক : লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফিলিস্তিনে যারা নারী ও শিশু হত্যা করেছেন, বিএনপি সেই ইসরায়েলিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, ‘রতনে রতন চেনে’। ইসরায়েলের মতো বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে আওয়ামী লীগ উৎখাতের নামে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। মঙ্গলবার লন্ডনের হোটেল তাজে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি বিরোধী দল বিএনপির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন সাধারণ মানুষ বিএনপি-জামায়াতের এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করছে, তখন এই জোট দেশে শুরু করেছে গুপ্ত হত্যা, ইমাম হত্যা, পুরোহিত হত্যা। জোটটি আওয়ামী পরিবারের সদস্য জুলহাজকেও হত্যা করেছে। বিএনপি-জামায়াতের কোনও ধর্ম নেই, তারা পাক হানাদার বাহিনীর মতো একই কায়দায় হত্যাকা- চালাচ্ছেন।
সরকার উৎখাতের জন্য বিএনপি ইসরাইলের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে প্রমাণ করেছে তারা দেশের জন্য নয় নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য রাজনীতি করছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের আয়োজিত এক সভায় এমন মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় তিনি আরও বলেন, জামায়াতের সাথে এক হয়ে সারা দেশে গুম-হত্যার রাজনীতি করছে বিএনপি।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হত্যা করে তারা দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাও উস্কে দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
১৯৮১ সালের ১৭ মে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সেই দিনের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর যখন আওয়ামী লীগের নাম কেউ নিতে পারত না, আমি তখন লন্ডনের বিভিন্ন শহরে দল পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখি। শেখ রেহানা প্রথম সুইডেনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ব্রিটেন প্রবাসি বাংলাদেশিদের সেই সময়ের সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে পাকিস্তান প্রেমীদের হাত থেকে রক্ষা করতেই দেশে ফিরে গিয়েছিলাম।
বাংলাদেশ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করেছি। যারা মানবতাবিরোধীদের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারসহ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে তার সরকার।
বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যপী যখন মন্দা চলছে, বাংলাদেশে তখন জিডিপি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কেউ কোনওদিন চিন্তা করতে পারেনি বাংলাদেশে ৩ লাখ কোটি টাকার বাজেট করা সম্ভব হবে। যার মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা শুধু উন্নয়ন বাজেট।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একজন লোকও গৃহহারা থাকবেন না। বর্তমানে ২ লাখ ৮০ হাজার ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীকে অন্তত একটি করে টিনের ঘর তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার স্বপ্ন।
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের আয়োজনে সভায় উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সুলতান শরীফ, অল ইউরোপিয়ান আওয়ামীলীগের সভাপতি অনিল দাসগুপ্তসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
দুদিনের ব্যক্তিগত সফর শেষে বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় বুলগেরিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা দেন প্রধানমন্ত্রী। বুলগেরিয়ায় গ্লোবাল ওমেন লিডার্স ফোরামে যোগ দিয়ে আগামী ২১ প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে ফেরার কথা রয়েছে।