সাজ্জাদুল হক : সাপ্তাহিকের সম্পাদক গোলাম মোর্তজা বলেছেন, শিক্ষক অবমাননায় ফৌজদারি অপরাধের কথা বলা হয়েছে এ কারণে যে, যেহেতু প্রশ্ন এসেছে সেলিম ওসমান অপরাধ করেছেন না করেননি? সেই কারণে ফৌজদারি অপরাধের কথা বলা হয়েছে। তিনি যে অপরাধই করে থাকুন না কেন, সেখানে ক্ষমা চাওয়া বা না চাওয়া সেটি বিষয় না। বিষয়টি হলো অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, তার তথ্য-প্রমাণ আছে। তার প্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
একাত্তর টেলিভিশনে প্রচারিত ‘একাত্তর জার্নাল’ অনুষ্ঠানে গোলাম মোর্তজা এসব কথা বলেন।
গোলাম মোর্তজা বলেন, আরেকটি বিষয় হলো, তদন্ত শুরু হয়েছে। যেটা দুই রকমের ব্যাপার। একটা মানুষকে আশাবাদি করে আরেকটা মানুষকে আতঙ্কিত করে। আর এই তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই বলছি, এ তদন্ত আমাদের আশাহত করছে। কারণ সাংসদ সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ একেবারে তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ। সেই অভিযোগ তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের। এখানেই অবাক লাগে যে, আইনমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন মন্ত্রী এ বিষয়ে কথা বলার পরেও সেগুলোকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে নিজের ইচ্ছামত কাজ করতে পারেন, সেইখানে জেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা তদন্ত করে কি অপরাধ সনাক্ত করবেন। সেটা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য?
তিনি বলেন, এই তদন্ত কমিটিতে তারা মূলত যে কাজটি করবে সেটা হলো, ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি আনা হয়েছে অর্থাৎ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগ, সেটি সত্য কি সত্য নয়, মূলত সেটাই হলো তদন্ত করার ক্ষমতা। বা এই তদন্তে এই বিষয়টিই দেখবে তদন্ত কমিটি।
তিনি আরও বলেন, মূলত যারা নির্ভয়ে তদন্ত করে সুষ্ঠু একটা রিপোর্ট দিতে পারবে অর্থাৎ প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করতে পারবে তাদের দিয়ে তদন্ত করালে হয়তো সমাধান পাওয়া যেতে পারে। সেই কমিটেতে কারা হতে পারে তাৎক্ষণিকভাবে সেটা আমার জানা নেই। আমাদের সমাজে এখনো অনেক সৎজন আছেন যাদের ওপর আস্থা রাখা যায়। যেমন একজন প্রাক্তন বিচারপতি হতে পারেন। ঘটনা ঘটেছে গত শুক্রবার প্রায় এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল এখনো বিচারের কোন অগ্রগতি দেখছি না। সরকারের মন্ত্রী পর্যায় থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের মানুষই বিচার চাচ্ছি কিন্তু সকলেই যদি বিচার চাই তাহলে বিচারটা করবে কে? বিচার করার কথাতো রাষ্ট্রের। বিচার চাওয়ার কথাতো নয়। রাষ্ট্র যদি আন্তরিকভাবে চাইতো তাহলে এতো দিনে বিচার সম্পন্ন হতো। সেলিম ওসমান একজন সংসদ সদস্য, সেই সংসদে একজন স্পিকার আছেন। আমরা তো স্পিকারের কোন বক্তব্য শুনলাম না। এই জায়গাগুলোতে আমরা শ্রদ্ধা রাখতে চাই, আস্থা রাখতে চাই।