রফিক আহমেদ : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা প্রচলিত আইনের লঙ্ঘনের অপরাধে সেলিম ওসমানের সংসদ সদস্যপদ বাতিল ও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃদ্বয় এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃদ্বয় নারায়ণগঞ্জের পিয়ার লতিফ সাত্তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভক্তকে অন্যায়ভাবে নিগ্রহ এবং ওই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করারও দাবি জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে সকল ধর্মবিশ্বাসের চর্চার অধিকার আছে এবং সেই অধিকারের উপর কারো অযাচিত হস্তক্ষেপ কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেবলমাত্র প্রধান শিক্ষকের পদ দখলের মতো নোংরা কাজের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের জাতীয় পার্টি দলীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে সম্মানিত শিক্ষক নিগ্রহের প্রেক্ষিতে সারাদেশে যখন প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ঝড় উঠেছে। এমনকি সরকারের একাধিক মন্ত্রী যখন এ বিষয়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন, তখন সেলিম ওসমান বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে হেফাজতে ইসলামের মতো ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সাম্প্রদায়িক নোংরা কার্ড খেলার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। সর্বশেষ মতবিনিময় সভার নামে টাকা দিয়ে হেফাজতে ইসলামের লোকজন ভাড়া করে এনে তিনি সেখানে আরও নোংরা তামাশা করেছেন।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন- নারায়ণগঞ্জেই শুধু নয়, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে নাস্তিকতা কিংবা ধর্ম অবমাননার অজুহাত তুলে কিছুসংখ্যক দুষ্কৃতিকারী সামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আগে এই জাতীয় উগ্রতা চলতো সাম্প্রদায়িকতার নামে, এখন সেটাকে নাস্তিকতার রূপ দেওয়া হয়েছে। এই বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার হয়েছিল শান্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম হিসেবে। কিন্তু উগ্র ধর্মীয় সশস্ত্র জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকরা ইসলামের নামে আজ যেভাবে জঙ্গিবাদী অপতৎপরতা চালাচ্ছে- তা পরিষ্কারভাবেই ধর্ম তো বটেই, এমনকি বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের বিরোধী। নারায়ণগঞ্জের সাংসদ সেলিম ওসমান সেই অপকর্মটিই সুপরিকল্পিতভাবে করেছেন এবং করে চলেছেন। এ জাতীয় অপকর্মকে প্রশ্রয় দেওয়ার অর্থ হলো সংবিধান ও আইন পরিপন্থী কর্মকে উস্কে দিয়ে বাংলাদেশের প্রচলিত সামাজিক ও ধর্মীয় সহনশীলতার ধারাকে বিনষ্ট করা।