সীমান্ত ওমর : সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম বলেন, আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা যেটাকে সচরাচর ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করছি সেটি আসলে ষড়যন্ত্র কি না তা নির্ভর করে প্রেক্ষাপটের ওপর। যেমন ধরুন, বিএনপি সব সময় অভিযোগ করে আসছে সরকার বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এখন তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই যে সরকার এমন একটা ছক কষেছে এবং এর পক্ষে প্রমাণও রয়েছে। এটা কিন্তু পেনাল কোডের অধীনে কোন অপরাধ হবে না। কিন্তু বিএনপি যদি এমন কিছু করে, যেমন এই সরকারকে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় এবং তার পক্ষে যদি প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলেই তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ মামলা করা যাবে।
দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত ‘নাজমুল আশরাফের নির্বাচিত খবর’ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানের আজকের বিষয় ছিল ‘ষড়যন্ত্রের রাজনীতি’। অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শান্তনু চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান।
ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম বলেন, লক্ষ্য করুন দুটি রাজনৈতিক দল একই কাজ করছে, কিন্তু দুটির পরিণাম এক না আইনের দৃষ্টিতে। এর কারণ হচ্ছে, যে সরকার ক্ষমতায় থাকে অর্থাৎ যে রাজনৈতিক দল সরকার তৈরি করে বলা হয়ে থাকে তারা দেশের সার্বভৌমত্বের রক্ষক। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে আমরা পড়েছি যে রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সার্বভৌমত্ব। একটি ভূখ-ের সার্বভৌমত্ব না থাকলে সেটিকে রাষ্ট্র বলা যায় না। একারণেই আন্তর্জাতিক আইনে কোন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধ মামলা করা যায় না। কারণ রাষ্ট্রের উপরে আর কোন সংগঠন নেই বা সুপার কোন রাষ্ট্র নেই যে রাষ্ট্রের বিচার করবে।
তিনি আরো বলেন, আইনে ষড়যন্ত্রের দুটি ভাগ করা রয়েছে। একটিকে আইনের ভাষায় বলা হয় সেডিশন অপরটি ট্রেজন। দুটোর মধ্যে পার্থক্য হলো সেডিশন করা হয় সরকারের বিরুদ্ধে আর ট্রেজনটা করা হয় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। অর্থাৎ আইনের দৃষ্টিতে ষড়যন্ত্রকে সংজ্ঞায়ন করার জন্য প্রেক্ষাপট দরকার। কোন প্রেক্ষাপট থেকে কাজটি করা হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাস হচ্ছে, বিজয়ীর ইতিহাস অর্থাৎ বিজয়ী ইতিহাস রচনা করে তাই সে কর্মকা-টিকে যেভাবে দেখায় আমরা সেভাবে মেনে নিই।