সালমা পারভীন : শুষ্ক মৌসুমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে গঙ্গা নদীর ওপর ব্যারেজ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রাথমিক সমীক্ষাও শেষ হয়েছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতকে সঙ্গে নিয়েই এ প্রকল্পে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে বাংলাদেশ একাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
১৯৭৫ সালে ভারতের ফারাক্কা ব্যারেজের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষি, মৎস ও বন সম্পদ এবং নৌ চলাচলে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ভাটিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গঙ্গার পানি প্রবাহ উল্লেখযোগ্যক হারে হ্রাস পায়।
শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকে রাখতে ভারত সম্প্রতি আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্পের ওপর গুরুত্ব দেয়ায় সামনের দিনগুলোতে এ প্রবাহ আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ অবস্থায় দেশের রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে সরকার গঙ্গা নদীর ওপর একটি ব্যারেজ নির্মাণের পরিকল্পনা করে। ৯৬টি গেটযুক্ত দুই দশমিক এক শূণ্য কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ প্রস্তাবিত ব্যারেজ ৩১ লাখ ২০ হাজার কিউসেক পানি ধরে রাখবে।
প্রাথমিকভাবে ৪টি সমীক্ষা চালানোর পর ২০০২ সালে চূড়ান্তভাবে রাজবাড়ি জেলার পাংশায় এ ব্যারেজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে ব্যারেজ নির্মাণে ভারতের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে রয়েছে মিশ্রমত।
পনিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘যেহেতু ভারতও এই একই নদীর সঙ্গে সংযুক্ত, সুতরাং ভারতের সহযোগিতা আমাদের অবশ্যই প্রয়োজন হবে।’
পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, ‘ভারত যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চায় ভালো। তবে এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। তিস্তা ব্যারেজ করার সময়মতো আমরা ভারতের কাছে অনুমতি নেয়নি।’
ভারত বাংলাদেশ যৌথ গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তিটি আগামী ২০২৬ সালে শেষ হবে। তাই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে ৩২ হাজার কোটি টাকার এ ব্যারেজ প্রকল্পে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান বলেন, ‘এ প্রকল্পে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবো।’
২০১৮ সালে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করা গেলে ২০২৫ সালের মধ্যে তা শেষ হবে বলে আশাবাদী সরকার।
সময় টিভি থেকে নেয়া