আরিফুর রহমান : ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিতে আসছে বাজেটে সব ধরনের চাল আমদানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হচ্ছে। একইভাবে চা শিল্পের সুরক্ষায় আমদানি করা প্রতি কেজি চায়ে শুল্ক বসছে ২ ডলার। তবে দ্রব্যমুল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পিঁয়াজ, ভোজ্যতেল, ডাল, গমসহ কৃষি উপকরণ সার, বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক অব্যাহত থাকবে। এ সুবিধা থাকছে পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পে। দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়ার যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক কমছে ৫০ শতাংশ।
এক সময়ের চা রপ্তানিকারক দেশ থেকে বাংলাদেশের পরিচয় এখন চা আমদানিকারক হিসাবে। অবাধ আমদানির সুযোগে নানা দেশের নানা ব্রান্ডের চায়ে বাজার সয়লাব। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় চা শিল্প। বিপন্ন হচ্ছে হাজারো শ্রমিকের জীবন।
তবে এবারের বাজেটে স্থানীয় চা শিল্প সুরক্ষায় শুল্ক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রতি কেজি চা আমদানিতে শুল্ক বসানো হচ্ছে ২ ডলার করে।
ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান বলেন, ‘চায়ের ওপরে যদি ট্যাক্স বসে তাহলে আমি জানিনা সরকার কত টাকা ট্যাক্স পাবে। কিন্তু মানুষের চা খাওয়া কমে যেতে পারে। আমাদের দেশে যারা চা উৎপাদন করে তারা হয়তো কিছুটা প্রাইস ইনসেনটিভ পাবে। সে কারণে হয়তো আমাদের দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে আগের পর্যায়ে চলে যেতে পারব’।
দেশের পুষ্টির প্রধান উৎস হাঁস-মুরগী খাতের উন্নয়নে এ খাতে খাদ্য সামগ্রী ও যন্ত্রপাতির শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এর আওতা বাড়ানো হচ্ছে। দুগ্ধ শিল্পের প্রসারে এই শিল্পের উপকরণ, স্টেবিলেজার ফর মিল্কের সম্পুরক শিল্প ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হচ্ছে ১০ শতাংশ।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘সাধারাণভাবে মনে হতে পারে ছাড় দিচ্ছে কিন্তু অনেক সময় ছাড় দিয়ে এটাকে আমি আরও বেশি পেতে পারি। সুতরাং একটা এ্যাকসন দিয়ে বোঝা যাবে না এটা ট্যাক্স বেড়ে গেলে না কমে গেল। চালের ক্ষেত্রে যাতে বেশি আমদানি না করতে হয় সেজন্য কিছু ট্যাক্স বাড়ানোর প্রয়োজন আছে’।
দেশের ধানের বাম্পার ফলনেও কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না বলে অভিযোগ আছে। একদিকে উপকরণের বাড়তি দাম অন্যদিকে পানির দামে ফসল বিক্রি করে কৃষকের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে আসছে বাজেটে চাল আমদানিতে বিদ্যমান ১০ শতাংশের সাথে আরও ১৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর প্রস্তাব থাকছে।
কৃষককে সহায়তার অংশ হিসাবে সার, বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতিতেও বিদ্যমান শুল্ক সুবিধা অব্যাহত থাকছে। তবে উন্নত কৃষির জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা এবং গবেষণায় মনোযোগ দেওয়া।
সূত্র: চ্যানেল টুয়েন্টিফোর.