নাসিমুজ্জামান সুমন : ইউরোপে প্রবেশে অভিবাসীদের কাছে বিক্রির জন্য নকল পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র, ইউরোপ ভ্রম নের স্যানগ্যান ভিসা এবং জাল রেসিডেন্ট পারমিট তৈরির সন্দেহে গ্রীসের পুলিশ ও ইন্টারপোল ১৬ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ বলছে, এই অপরাধীরা দুটি চক্রের সদস্য। যার একটি চক্রের নিয়ন্ত্রণ করতো বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি দল।
এ বিষয়ে গ্রীসে বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বিবিসিকে বলেন, ‘গ্রীক সরকার বাংলাদেশি বা বিদেশীদের সঠিকভাবে কাগজ পত্র দেয় না। এছাড়া, লিগেল হওয়ার পরেও যারা গ্রীসে কাজ করে না তাদের কাগজ সঠিকভাবে রাখতে দেয় না, ইনস্যুরেন্স দেয়া হয় না। গ্রীসে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের মানুষ যাদের কাগজ পত্রে সমস্যা থাকে তাদেরকে সাময়িকভাবে চলার জন্য একটি চক্র অবৈধভাবে কাগজ পত্র বের করে দেয়।’
এই চক্রটির সম্বন্ধে প্রথম কখন জানা যায়? পশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রথম জানা যায় ৭ থেকে ৮ মাস আগে। যারা দীর্ঘদিন থেকে জাল কাগজ পত্রের ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের মধ্যে একজন বাংলাদেশিও আছে। তিনি ডিএইচএল কোম্পানির সাথে সাব এজেন্ট হিসেবে কাজ করতো। এর আগে অবৈধ পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠানোর ফলে প্রশাসন বিষয়টি অনুন্ধানের জন্য ডিএইএল-এর একটি শাখায় গিয়ে বিভিন্ন পেশার মানুষের পাসপোর্ট জব্দ করে এবং ডিএইচএল-এর এজেন্টের অফিসে গিয়ে ছদ্মবেশে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ডিএচএল-এর এজেন্টসহ সুদানী কয়েকজনকে জেলে দেয়া হয়। পরে তারা জামিনে বের হয়ে আসে।
এরপর, তার যে যখন যেখানে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো সেসব যায়গায় পুলিশ তাদের অনুসরণ করতো। তাদের টেলিফোনে কথা বার্তা রেকর্ড করা হয়। এর ওপর ভিত্তি করে অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত বাংলাদেশিসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।’
চক্রটির পরিধি সম্বন্ধে জানতে চাইলে জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এটা বিশাল বড় একটি গ্যাং চক্র। বিদেশীদের বিভিন্ন চক্রের সাথে তারা কাজ করে। শুধু বাংলাদেশিরা এর সাথে জড়িত আছে তা নয়, বিদেশীরাও জড়িত। এর সাথে যুক্ত আছে আফ্রিকান, সুদানী, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ। যার সাথে বাংলাদেশেরও কিছু লোক জাড়িত আছে।’
এখন তাদের বিরুদ্ধে কী ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে কী ধরণের শাস্তি হতে পারে?
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখনো তারা জামিন-বিহীন অবস্থায় আছে এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়ে জিঞ্জাসাবাদ করা হচ্ছে। আমি মনে করি বিষয়টি খুব কঠিন আকার ধারণ করবে। আমি বাংলাদেশি সমিতির সভাপতি হিসেবে কোর্টে গিয়েছিলাম কিন্তু তারা আমার কোন বক্তব্য শুনতেই রাজি নয়। তাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ১২ থেকে ১৪ বছরের জেল হতে পারে। এছাড়া অর্থ জরিমানাও হতে পারে।