মোহাম্মদ রবিউল্লাহ : ভারতে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করার আশা করিছিলেন একজন চা বিক্রেতা প্রার্থী। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পর এই বঙ্গেও হয়ত ক্ষমতার অলিন্দে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন আরও একজন খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি। এই মানুষটি হলেন রানাঘাট উত্তর-পূর্বের সিপিআই(এম) ও কংগ্রেস জোট প্রার্থী বাবুসোনা সরকার (২৭)।
তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নিজের তুলনা টানতে রাজি নন ২৭ বছর বয়সী এই যুবক। তাঁর কথায়, আমি নিজের সঙ্গে কারোর তুলনা করতে চাই না। আমি আমার মতো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় রানাঘাট শহর থেকে নয় কিলোমিটার দূরের আড়ংঘাটা রেলস্টশনে চায়ের দোকান আছে বাংলা সাহিত্যে এমএ পাশ করা বাবুসোনার। তাঁর বাবার আমল থেকে চলা এই চায়ের দোকানটি এখন একমাত্র সন্তান বাবুসোনাকেই চালাতে হয়। তবে তাতে কোনও দুঃখ নেই তাঁর।
২০০৬ সালে রানাঘাট কলেজে পড়ার সময় সিপিআই(এম)’র ছাত্র সংগঠন এসএফআই এর সঙ্গে যুক্ত হয় বাবুসোনা। আর তারপর থেকেই সংগঠনের কাজে তাঁর দক্ষতাই তাঁকে প্রার্থী করেছে বিধানসভা নির্বাচনে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আছে ৭০০ টাকা আর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৯৩,০০০ টাকা।
তবে ভোট প্রচারে নিজের পকেটে থেকে কোনও টাকা খরচ করতে হয়নি বলেই জানান তিনি। তাঁর কথায়, “প্রচারের ব্যাপারে যা করার দলের সমর্থক আর আমাকে যারা ভালোবাসেন তাঁরাই করেছেন। আমার পকেট থেকে কোনও খরচই করতে হয়নি।”
এদিকে, ছেলের জয় হলে জীবন অর্থবহ হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছিলেন বাবুসোনার বাবা। তবে বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। নদীয়ায় জেলায় মোট ১৭টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জয় পেল তৃণমূল। জোটের ঝুলিতে গিয়েছে চারটি আসন। ২০১১ সালে এই জেলায় তৃণমূলের দখলে ছিল ১৪টি। পরিবর্তনের ঝড়েও সিপিএম তিনটি আসন ধরে রাখতে পেরেছিল। এবার আসন বৃদ্ধি করতে পারেনি মমতার দল। বরং একটি আসন কমেছে।
উল্লেখযোগ্য হার হল শান্তিপুরের পাঁচ বারের বিধায়ক অজয় দে’র। তিনি ১৯৯১ সাল থেকে টানা জয়ী হয়ে আসছিলেন। ১৯হাজার ৫৩৯টি ভোটে হার হয়েছে তাঁর। জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী অরিন্দম ভট্টাচার্য। রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম কেন্দ্রে তৃণমূলের পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়কে ২৩ হাজার ২৫৮টি ভেটে পরাজিত করলেন কংগ্রেস প্রার্থী শংকর সিংহ।
তবে চূর্ণি নদীর পাড়ে রানাঘাট উত্তর পূর্বে শাসক দলের সমীর পোদ্দার পুনরায় জয়ী হয়েছেন ১৪হাজার ৮৭০টি ভোটে। পরাজিত হয়েছেন সিপিএমের বাবুসোনা সরকার।