রাকিব খান : অনিয়ম, সহিংসতায় প্রাণহানির মধ্য দিয়ে নবম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের শেষ পর্বের ভোট শেষ হলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবুদ্দীন আহমদ বলেছেন, এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু, সফল ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার ষষ্ঠ ও শেষ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনের শুরু থেকেই ভোটের আগের রাতে কেন্দ্র দখল করে দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক ব্যালটে সিল মারা বন্ধ করার জন্য নির্বাচন কমিশন বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নির্বাচন কমিশনের কঠোর নির্দেশ ও কার্যকর পদক্ষেপের কারণেই এই অপসংস্কৃতি সম্পূর্ণ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পঞ্চম ধাপে একটি মাত্র কেন্দ্র ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারার ঘটনা ঘটলেও ষষ্ঠ পর্যায়ে কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। ভোটের আগের রাতে সিল মারার কারণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এবারের ইউপি নির্বাচনে প্রায় ২০ কোটি ব্যালট পেপার মুদ্রণ করতে হয়েছে। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক থাকায় স্বল্প সময়ে নির্ভুলভাবে মুদ্রণ করা করা ছিলো কমিশনের বিশেষ চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ তত্তাবধানে ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কঠোর পরিশ্রমের কারণেই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে।
সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ ছিলো শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন কারণে কোর্টের আদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। এতে করে প্রথম দিকে যে ব্যালট পেপার নষ্ট হয়েছে কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ার কারণে ব্যালট পেপার মুদ্রণ এবং পাঠানো ছিলো অসাধ্য। প্রত্যেক প্রার্থী যাতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সুযোগ পায় এবং প্রতিটি ভোটার যেন নির্ভয়ে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করতে পারেন এবং এ ব্যাপারে কোথাও যেন সহিংসতা না হয় সে লক্ষ্য নিয়েই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। এ ব্যাপারে কোথাও কোনো শিথিলতা বরদাস্ত করা হয়নি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য প্রতিটি পর্যায়ে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে। কেন্দ্র দখল করতে আসা সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর নির্দেষণা দেয়া হয়। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সারা দেশে নির্বাচনে অনিয়ম ও আচরণ বিধি ভঙ্গের অপরাধে এ পর্যন্ত পাওয়া খবরে ৫শ’ জনকে ১২ কোটি ৮৫ লক্ষ ৯শ’ টাকার জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- দেয়া হয়েছে।