এম রবিউল্লাহ: ভারতের ‘উড়তা পাঞ্জাব’ চলচ্চিত্রে সেন্সর বিতর্ক নিয়ে এবার মুম্বাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সিনেমার প্রযোজকরা। তারা সিনেমা সম্পর্কে সেন্সর বোর্ডের রিভিউ কমিটির রিপোর্টের প্রতিলিপি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
রিভিউ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী সিনেমা থেকে ৮৯টি দৃশ্য বাতিলের নির্দেশ দেয় সেন্সর বোর্ড। সেই সঙ্গে সিনেমায় পাঞ্জাব সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। সেন্সর বোর্ডের এই আদেশে ভিষণ ক্ষুব্ধ হন সিনেমার অন্যতম প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ। মঙ্গলবার তিনি এক টুইটবার্তায় বলেন, মনে হচ্ছে এটা যেন উত্তর কোরিয়া।
টুইটে তিনি সেন্সর বোর্ডের এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে তুলে নেওয়ার আহবান জানান। এছাড়াও তার ফোনের কোনও উত্তর কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠৌর দেননি তাও জানতে চেয়েছেন কাশ্যপ।
এদিকে সেন্সর বোর্ডের বিরুদ্ধে তার এই লড়াইকে রাজনৈতিক রুপ দেওয়ার চেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করেছেন কাশ্যপ। তিনি বলেছেন, ইউপিএ সরকারের আমলেও তিনি সেন্সরশিপ ইস্যুতে অনেক বেশি লড়াই করেছেন। তবে তখন সেন্সর বোর্ডে পহলাজ নিহালনির মতো কেউ ছিলেন না।
কাশ্যপ স্পষ্ট বলেছেন তার লড়াই বোর্ডের প্রধান নিহালনির বিরুদ্ধে। তবে এই বিতর্ক নিয়ে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন কাশ্যপ। তার অভিযোগ, তাকে কংগ্রেস বা আম আদমি পার্টির এজেন্ট হিসেবে তুলে ধরার জন্য কোনও একটি বিশেষ দলের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রচার চলছে।
ছবির প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ হতাশ হয়ে জানিয়েছেন, তিনি সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে একটি টুইট করেছেন। সেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন গত দশ দিন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রীকে একাধিকবার ফোনে চেষ্টা করলেও তিনি কেন তার ফোন ধরেননি।
সেন্সর বোর্ডের রিভিউ কমিটি চলচ্চিত্র থেকে ৮৯টি দৃশ্য বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। শুধু এখানেই থামেনি সেন্সর বোর্ড। ছবি থেকে পাঞ্জাব সংক্রান্ত সব ধরনের তথ্য সরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। উত্তরে কাশ্যপ জানিয়েছেন, এটা একেবারেই সম্ভব নয়।
এই পরিস্থিতির জন্যে তিনি সরাসরি সেন্সর বোর্ডের প্রধান পহেলাজ নিহালানিকে দায়ী করেছেন। তিনি সেন্সর বোর্ডের প্রধানের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন, তিনি এক নায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। তবে কাশ্যপের আক্রমণে নিজের সিদ্ধান্তে সেন্সর বোর্ডের প্রধান অটল পহেলাজ নিহালানি।
পুরো বলিউডই প্রকাশ্যে কাশ্যপের সমর্থন দিয়েছে। অনেক সমালোচক এই ঘটনাকে আগামী বছর পাঞ্জাবে রাজ্যসভা নির্বাচনের সঙ্গে যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের অভিযোগ, সেখানকার শাসক দল ইচ্ছাকৃতভাবে সত্যি ঘটনাকে আড়াল করার জন্যে এই কাজ করেছে।
এপ্রসঙ্গে কংগ্রেস সহসভপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, পাঞ্জাবে মাদকচক্র এক বড় সমস্যা। সেখানে এই সিনেমার ওপর সেন্সরের মাধ্যমে সেই ঘটনাকে আড়াাল করা যাবে না।
এদিকে অনুরাগ কাশ্যপ রাজনৈতিক দলগুলোকে এই বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে বলেছেন। গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের অধিকারে সেন্সর বোর্ড হস্তক্ষেপ করছে বলে দাবি করেছেন তিনি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি ও জি নিউজের।